রাজনীতিতে পরিত্যক্ত মানুষগুলোর আওয়াজও ব্যাঙের মতো বড়

মান্না ভাইয়েরা রাজনীতিতে পরিত্যক্ত, তাদের কথার মূল্য নাই রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জেলা ইউনিটের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১২ মে, ২০২৪ at ১১:১০ পূর্বাহ্ণ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ব্যাঙ প্রাণী হিসেবে অনেক ছোট হলেও আওয়াজ অনেক বড়। রাজনীতিতেও কিছু পরিত্যক্ত মানুষ আছে, যারা ঘুরে ঘুরে সব দল করে। আর রাজনীতিতে পরিত্যক্ত মানুষগুলোরও ব্যাঙের মতো আওয়াজ বড়।

গতকাল শনিবার দুপুরে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক, বিডিআরসিএস ব্যবস্থাপনা পরিষদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও বিশ্ব রেড ক্রস, রেড ক্রিসেন্ট দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্না ভাইয়ের একটা বক্তব্য গতকাল পত্রিকায় পড়লাম। পরশুদিন রাতে টেলিভিশনে শুনলাম। সরকারের নাকি একদম ভিত নাই। সরকারের ভিত নাই বিধায় পরপর চারবার আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায়। তারা তো টেনে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু টান দিতে গিয়ে তারাই ধপাস করে পড়ে গেছেন। এখন কোমর যে ভেঙে গেছে সে অবস্থা থেকে আস্তে আস্তে একটু দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। গত বছর ২৮ অক্টোবর কার আগে কে দৌড় দেয় সেই প্রতিযোগিতা আমরা দেখেছি নয়াপল্টনের সামনে।

নগরীর আন্দরকিল্লা রেড ক্রিসেন্ট মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা রেড ক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার আসলাম খান। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও রেড ক্রিসেন্ট জেলা ইউনিটের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংবর্ধেয় অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম ইউ কবির চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্না ভাইসহ আরো কিছু দল ও ব্যক্তিবিশেষ আছেন, যাদের নিজের দলের কোনো ভিত্তি নাই, ঘুরে ঘুরে দল করেন। মান্না ভাই মাশাআল্লাহ এই পর্যন্ত মাত্র সাতটি দল বদল করেছেন। কতদিন জাসদ ভেঙে বাসদ, আবার বাসদ ভেঙে এখন গণতন্ত্র মঞ্চ। সেটি ভেঙে কখন আবার পালিয়ে যান সেটি বলা যায় না। রাজনীতিতে তারা পরিত্যক্ত ব্যক্তিবিশেষ। এদের কথার কোনো মূল্য নাই।

তিনি বলেন, তাদের দল ছোট, যখন সমাবেশ করেন তাদের মানুষ থাকে ২০ থেকে ৩০ জন, সাংবাদিক থাকে ৫০ জন। এই নিয়ে তাদের সমাবেশ হয়। কিন্তু গলা অনেক বড়, এদের একজন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে ভোটে দাঁড়িয়েছিল। প্রাপ্ত ভোট দুই হাজার পূর্ণ করতে পারে নাই। কিন্তু আওয়াজ অনেক বড়। আবার টেলিভিশনে দেখা যায় ভলিউমও তাদের একটু বড় থাকে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সমগ্র পৃথিবী আজকে সেটির প্রশংসা করছে। জাতিসংঘের মহাসচিব প্রশংসা করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রশংসা করেন, ভারতের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করেন, জার্মান চ্যান্সেলর প্রশংসা করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট প্রশংসা করেন। সমগ্র পৃথিবী প্রশংসা করে। কিন্তু বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা এটির প্রশংসা করতে পারে না। আমাদের রাজনীতিতে প্রত্যাখ্যান আর সংঘাতের সংস্কৃতি না থাকলে দেশ আরো বহুদূর এগিয়ে যেতে পারত।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পর আশিটা দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চিঠি লিখে বলেছেন, আমাদের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান। এতে ব্যক্তিবিশেষ রাজনীতির ব্যাঙদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এজন্য তারা ব্যাঙের মতো বেশি বেশি লাফাচ্ছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি দেশ বিনির্মাণে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভবিষ্যতের পথচলায় আমাদের দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি স্বাস্থ্যসেবা এবং মানবসেবার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে, সেই প্রত্যাশা থাকল।

স্কুলজীবনে জুনিয়র রেড ক্রসের সদস্য ছিলেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন জায়গায় ও ক্যাম্পে গিয়ে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমি মনে করি জীবনের বহুপথ পাড়ি দিয়ে, বহু প্রতিন্ধকতা ডিঙিয়ে আজকের এই পর্যায়ে আসার ক্ষেত্রে রেড ক্রিসেন্ট ও বয়েজ স্কাউটিং আমার জীবনে বড় ভূমিকা পালন করেছে। দেশের মানব উন্নয়ন সূচক ও স্বাস্থ্য সূচকের উন্নয়নে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সমগ্র বাংলাদেশে অত্যন্ত চমৎকারভাবে কাজ করে চলেছে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবাকে আরও উন্নত করার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সবার আগে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। কারণ দেখা যায় যে, সরকারি হাসপাতালে সরকার কিনে দিয়েছে মেশিন, কিন্তু সেই মেশিনের বাঙ খোলা হয় না। আবার মেশিন খোলা হয় ঠিকই। ক’দিন পরে নষ্ট হয়ে যায়। মেরামতের আর উদ্যোগ নেওয়া হয় না, যাতে করে মানুষ প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হয়। এগুলো যারা করেন, তারা আসলে জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়ান, জনগণের বিপক্ষে কাজ করেন। এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যসেবাকে আরো উন্নত করার ক্ষেত্রে এবং সহজসুলভে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়।

মন্ত্রী বলেন, যখন জনগণ এগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে. তখন যারা এই কাজগুলো করেন তাদের পক্ষে করা আর সম্ভবপর হবে না। সরকার কোনো যন্ত্র নয়, সরকারও কিন্তু মানুষ দিয়ে চলে। সুতরাং জনগণ যখন এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলবে সরকারের পক্ষেও এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজতর হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফের আসছে তাপপ্রবাহ
পরবর্তী নিবন্ধসৌদি আরবে হজ যাত্রীদের জন্য থাকছে উড়ন্ত ট্যাক্সি