মিয়ানমারের ভারী অস্ত্রের শব্দে কাঁপল টেকনাফ সীমান্ত

তুমব্রু সীমান্তে ধানক্ষেতে রকেট লাঞ্চার

বান্দরবান ও টেকনাফ প্রতিনিধি | শনিবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৯:০২ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি আর মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে টেকনাফের ঝিমংখালী সীমান্ত এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৫টা এ শব্দ শোনা যায়।

টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্ষ্যং উনছিপ্রাং এলাকার সঙ্গে মিয়ানমারের দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। কাছাকাছি হওয়ায় মিয়ানমারে কী হচ্ছে তা অনেকটা খালি চোখেই দেখা যায়। উনছিপ্রাং সীমান্তের স্থানীয়দের দাবি, ওপারে ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিগুলো দখল করে দক্ষিণ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। এই কারণে টেকনাফ অংশে মিয়ানমারের শহর শীলখালী, বলিবাজার ও কুইরখালী থেকে এসব বিস্ফোরণের শব্দ আসছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের উনছিপ্রাং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রশিদ আহমদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের কয়েকটি এলাকায় ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। এতে আমাদের এলাকা কেঁপে উঠছে।’ এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের নোয়াপাড়ায় পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্বার করা অবিস্ফোরিত মর্টারের গোলাটি সেনা বোমা বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা নিষ্ক্রিয় করেন। গতকাল সকালে রামু সেনানিবাস থেকে আসা সেনা বোমা বিশেষজ্ঞ দল এই অবিস্ফোরিত মর্টারের গোলাটি ধ্বংস করে নোয়াপাড়া এলাকায়। অপর এক খবরে বিডিনিউজ জানায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু সীমান্ত এলাকার ধানক্ষেতে পাওয়া একটি অবিস্ফোরিত রকেট লাঞ্চার তুলে নিয়ে আসেন এক নারী। গতকাল দুপুরে উপজেলার পশ্চিমকূল তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় ধানক্ষেতে কাজ করার সময় স্থানীয় এক নারী একটি রকেট লাঞ্চার দেখতে পান। পরে ওই নারী লাঞ্চারটি হাতে ধরে তুলে এনে রাস্তার পাশে ফেলে রাখেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী তুমব্রু এলাকার বাসিন্দা ইয়াসিন আরাফাত বাবু সাংবাদিকদের জানান। পশ্চিমকূল তুমব্রু এলাকার বাসিন্দা শেখ কামাল বলেন, ‘যে ধানক্ষেতে লাঞ্চারটি পাওয়া যায়, সেটি সীমান্ত থেকে মাত্র দেড়শ গজ দূরে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক দিন আগে ওপারে মিয়ানমার সরকারি বাহিনী ও আরাকান আর্মিদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনার কোনো এক সময় লাঞ্চারটি এখানে এসে পড়ে থাকতে পারে।’

বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, লাল পতাকা টানিয়ে ঘুমধুম থেকে তুমব্রু চলাচলের রাস্তা বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন বিজিবির সদস্যরা। যোগাযোগ করা হলে ঘুমধুম পুলিশ তদন্তের কেন্দ্রে এসআই মাহফুজ ইমতিয়াছ ভুঁইয়া বলেন, ‘রকেট লাঞ্চারের ব্যাপারে এলাকাবাসী আমাদের জানিয়েছেন। কিন্তু বিষয়গুলো বিজিবি দেখছে।’

রহমতের বিল সীমান্তে লাশ : এদিকে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল সীমান্তে অজ্ঞাত একজনের মরদেহ পড়ে থাকার খবর পাওয়া গেছে। তবে সংঘাতপূর্ণ ওই এলাকায় গিয়ে লাশটি উদ্ধার করা কঠিন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খবরটি বিজিবিকে জানিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন। তিনি বলেন, ‘সীমান্তে মরদেহ পড়ে থাকার খবরটি বিজিবিকে দিয়েছি। কিন্তু এখনো আমরা উদ্ধার করতে পারিনি। বিজিবির আনুষ্ঠানিক অনুমতি পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬