পুলিশের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং জমি দখলের অভিযোগের মামলায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা কারাবাসের পর মুক্তি পেয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।
জামিনের কাগজ–পত্র যাচাই–বাছাই শেষে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মাহি মুক্তি পান বলে কারাগারের সুপার মো. আনোয়ারুল করিম জানান।
সৌদি আরব থেকে ওমরা শেষে সকালে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে চিত্রনায়িকাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে দুপুর দেড়টার দিকে তাকে গাজীপুরের আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মহানগর হাকিম মো. ইকবাল হোসেন। তবে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে অন্তঃস্বত্ত্বা এই চিত্রনায়িকার জামিনের আদেশ দেন একই বিচারক। খবর বিডিনিউজের।
মাহির আইনজীবী আনোয়ার সাদত সরকার বলেন, দুপুরে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়ার সময় তারা জামিনের আবেদন করার সুযোগ না পেলেও পরে আদালত চলার মধ্যেই জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত দুটি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছে। জামিন আবেদনে আমরা বলেছি, তিনি (মাহি) মামলার কথা শুনেই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে দেশে ফিরে আসেন। তিনি সন্তানসম্ভবা– এ বিষয়টিও আবেদনে উল্লেখ করা হয়। জামিন মঞ্জুরের পর পরই কাগজ–পত্র কারাগারে পাঠানো হয়।
একদিন আগেই মাহি ও তার স্বামী রকিব সরকারের বিরুদ্ধে গাজীপুরের বাসন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ। পাশাপাশি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আরেকটি মামলা করেন মাহির স্বামী রকিবের প্রতিপক্ষরা।
গাজীপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী রকিব ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক উপকমিটির সদস্য। রকিবকে বিয়ে করার পর রাজনীতিতে নামা মাহি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ–২ আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরমও কিনেছিলেন তিনি।
গত শুক্রবার ভোরে গাজীপুরে রকিবের গাড়ির বিক্রয় কেন্দ্র সনিরাজ কার প্যালেসে ভাংচুর হয়েছিল। ওই জমি নিয়ে রকিবের সঙ্গে স্থানীয় আরেক পক্ষের বিরোধ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে থাকা মাহি ও রকিব ওই ঘটনার পর ফেসবুকে লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগও আনেন তারা। তারপর পুলিশের মামলা হয়। আর গতকাল শনিবার সকালে মাহি একাই সৌদি আরব থেকে ফিরলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিপক্ষের আইজীবীরা হলেন মো. আনোয়ার সাদাত সরকার, রিপন চন্দ্র সরকার, নবীজুল ইসলাম ও কামরুল হাসান।
লাইভে পুলিশের বিরুদ্ধে বলে ভুল করেছি: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে পুলিশের বিরুদ্ধে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ করা ঠিক হয়নি বলে দুঃখপ্রকাশ করেছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। গ্রেপ্তারের সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর কারাগার থেকে বেরিয়ে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এসে মাহি পুলিশের বিরুদ্ধে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহেবের সঙ্গে কথা বলব, উনার কাছে আমার আইজীবীরা যাবেন, কথা বলবেন। তারাই ওই টাকার সত্যতা বের করবেন। আমি লাইভে টাকা নেওয়ার কথা বলে ভুল করেছি। যেহেতু পুলিশ কমিশনার আমাদের পুলিশ প্রশাসনকে রিপ্রেজেন্ট করেন। আমার লাইভে তার টাকা নেওয়ার কথা বলাটা পুরো বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসনকে বিতর্কিত করেছে হয়ত। আমি সেটার জন্য দুঃখিত, আমি অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করছি।