মানিকছড়িতে বেড়েছে তামাক চাষ, হালদা নিয়ে শঙ্কা

এক ভাগে নেমে গিয়েছিল, এখন ২০ ভাগ কৃষক তামাকে সম্পৃক্ত

হাটহাজারী প্রতিনিধি | শনিবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ at ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীর পার্বত্য জেলার মানিকছড়িতে তামাক চাষ বেড়েছে। তামাক চাষ নদী দূষণের জন্য ক্ষতিকর। তামাক চাষের কারণে নদী দূষণ ২০১৬ সালে হালদা নদীতে মা মাছের ডিম না ছাড়ার কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন হালদা বিশেষজ্ঞরা। এরপর প্রজননের এই আলাদা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ নদীর উপর অংশে ক্ষতিকর তামাক চাষ বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইডিএফ, পিকেএসএফের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি যৌথভাবে তামাক চাষ বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করে। ২০২১২০২২ সালে গৃহীত এই উদ্যোগের কারণে প্রায় ৯৯ শতাংশ তামাক চাষিকে তাদের মূল পেশা কৃষি কাজে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। কিন্তু একটি চক্র হালদা রক্ষায় গৃহীত এই উদ্যোগ মানতে পারেনি। হালদা নদী নিয়ে গবেষণারত সংশ্লিষ্টরা সম্প্রতি মানিকছড়ি গিয়ে লক্ষ্য করেন, আবার প্রায় ২০ ভাগ কৃষক তামাক চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এটা হালদা নদীর জন্য অশনি সংকেত হিসাব দেখছেন হালদা গবেষকরা।

হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, হালদা নদীতে ২০১৬ সালে ব্রুড মাছ ডিম না ছাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে শনাক্ত করা হয় মানিকছড়ি এলাকায় হালদা নদীর তীরে ব্যাপক হারে তামাক চাষকে। ২০১৭ সাল থেকে আইডিএফ এবং পিকেএসএফের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি যৌথভাবে তামাক চাষ বন্ধে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে। ২০২১২২ সালের দিকে এখানকার প্রায় ৯৯ ভাগ তামাক চাষিকে তাদের মূল ধারার কৃষিকাজে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। এই সফলতা তামাক কোম্পানিগুলো মেনে নিতে পারেনি। ২০২৩ সাল থেকে তামাক কোম্পানিগুলো যৌথভাবে এই এলাকার তামাক চাষিদের প্রণোদনা প্রায় চার গুণ বাড়িয়ে দিয়ে আবার তামাক চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। তখন থেকে আবার কিছু লোভী কৃষক তামাক চাষে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। সম্প্রতি পরিদর্শনে গিয়ে দেখলাম ১ ভাগ থেকে আবার প্রায় ২০ ভাগ কৃষক তামাক চাষে সম্পৃক্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে হালদা নদীর হেরিটেজ গেজেটে হালদা বেসিনে তামাক চাষ বন্ধে সংশোধনী আনার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। এই তামাক চাষ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না গেলে হালদা নদীর মৎস্য প্রজনন হেরিটেজ বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগভীর রাতে ঘর থেকে বের করে নারীকে তাড়া করে কোপাল দুর্বৃত্ত
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে পরীক্ষামূলক সি-ট্রাক চালু