ভোগ্যপণ্যের বাজারে চাপ

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৮ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ

দেশের ইতিহাসে জ্বালানি তেলের সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভোগ্যপণ্যের বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের বুকিং দর কমলেও দেশের অভ্যন্তরে ডলারের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে বেড়েছে আমদানি ব্যয়।
এর মধ্যে বেড়েছে ডিজেলের দাম। বছর না ঘুরতে দুই দফায় ডিজেলের দাম বেড়েছে লিটারে ৪৯ টাকা। স্বাভাবিকভাবে পণ্য পরিবহনে খরচ বাড়বে। ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের ভাড়া গড়ে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। সেই অতিরিক্ত ভাড়া যুক্ত হবে ভোগ্যপণ্যের সাথে। খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনি ৩ টাকা বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকায়। পেঁয়াজ কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে ৩২ টাকা, আদা কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে ৬২ টাকা, রসুন কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা, ভারতীয় লাল মরিচ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩৪০ টাকা, ভারতীয় মিষ্টি মরিচ ১৫ টাকা বেড়ে ৪০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মসুর ডাল কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৯২ টাকা, মটর ডাল কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৫৮ টাকা, হলুদ কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা, এলাচ কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৩০০ টাকা, জিরা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৪৩৫ টাকা, দারচিনি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩১০ টাকা ও লবঙ্গ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৫০ টাকায়। অপরদিকে পাইকারিতে পাম তেলের দাম বাড়লেও কমেছে সয়াবিনের দাম। বর্তমানে প্রতি মণ পাম তেল ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৪৫০ টাকা। সয়াবিন তেল মণে ৫০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৮০০ টাকায়।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ভোগ্যপণ্যের বাজারে প্রভাব পড়বে-এটাই স্বাভাবিক। কারণ একটাই, পরিবহন খরচ। ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে আমাদের আমদানি খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এর মধ্যে ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। যে গাড়ি আমরা ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করতাম, সেটি এখন ভাড়া করতে হবে ২৫-২৬ হাজার টাকায়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ডিজেলের দাম বৃদ্ধি করেছে সরকার। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথেই বাজারে কিন্তু এর প্রভাব শুরু হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা তাদের স্বভাবসুলভ পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবেন। মাঝখানে খরচের চাকায় পিষ্ট হবেন ক্রেতারা। এটাই সবসময় হয়ে আসছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাব, জনগণের কথা চিন্তা করে যেন ভোগ্যপণ্যের বাজারে অভিযান চালানো হয়। কারণ ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করেন। তাদের অজুহাতের শেষ নেই।.