৯ বছর পর জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ হার

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ৮ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ

সিরিজে ফিরে আসবে কি উল্টো সিরিজই হেরে বসলো তামিম বাহিনী। গতকাল হারারেতে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের কাছে বাংলাদেশ হেরেছে ৫ উইকেটে। এতে করে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। সাথে ওয়ানডে সিরিজও জিতে নিল তারা। আগামী ১০ আগস্ট তৃতীয় এবং শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে দুই দল। ২০১৩ সালের পর ওয়ানডেতে আর কখনো জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ হারেনি বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরে এসেছিল টাইগাররা। এরপর টানা ৫টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। অবশেষে ৯ বছর পর এসে আবারও সিরিজ জিততে সক্ষম হলো জিম্বাবুইয়ানরা।
তামিম ইকবালের নেতৃত্ব টানা ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হারল বাংলাদেশ। গতকাল আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৯০ রান তোলে তামিম ইকবালের দল। পরে সিকান্দার রাজ্জা ও রেগিস চাকাভার দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরিতে ৪৭.৩ ওভারেই পাঁচ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে নেয় জিম্বাবুয়ে। প্রথম ম্যাচেও বাংলাদেশ হেরেছিল ৫ উইকেটে। আগের ম্যাচে ৩০৩ রান করেও ম্যাচ জেতা যায়নি, গতকাল ২৯০ রান করে তাই চাপেই ছিল বাংলাদেশ। তবে মোস্তাফিজুর রহমানের চোটে একাদশে ডাক পাওয়া হাসান মাহমুদ নতুন বলে প্রত্যাশা পূরণ করেন। ১৩ রানের মাথায় উইকেট তুলে নেন হাসান। নতুন বলে উইকেট দখলের লড়াইয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামও শামিল হলে ৪৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
জিম্বাবুয়ানদের ব্যাটিং লাইনআপের গভীরতাও বেশি ছিল না। ফলে সিরিজে সমতায় ফিরবে বাংলাদেশ এমনটাই অনুমিত হচ্ছিল। কিন্তু সিকান্দার রাজার ঠান্ডা মাথার ব্যাটিং আর রেগিস চাকাভার পাল্টা আক্রমণ সামলাতে পারেনি বাংলাদেশ। দুজনের জুটি জমে গেলে বাংলাদেশি বোলাররা অসহায় বোধ করেন। নিজেদের মাঠে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন দুজন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৬৯ বল খেলে ২০১ রান তুলেছেন রাজা-চাকাভা। তবে এই জুটি ভাঙতে পারত অনেক আগেই। সিকান্দার রাজা ব্যক্তিগত ৪২ রানে থাকার সময় তাকে রান আউটের সুযোগ মিস করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সেই সিকান্দারই টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে জিম্বাবুয়েকে জেতান আরেকবার। শেষ পর্যন্ত ১২৭ বল খেলে ৮টি চার ৪টি ছয়ে ১১৭ রানে করে অপরাজিত ছিলেন। জিম্বাবুয়েকে জয়ের কাছাকাছি রেখে মাত্র ৭৫ বলে ১০২ রান করে ফিরেন রেগিস চাকাভা। জিম্বাবুয়ান অধিনায়ক চার মেরেছেন ১০টি, ছক্কা ২টি। শেষ দিকে টনি মুনিয়োঙ্গার ১৬ বলে ৩০ রানের ঝড় আগেভাগেই জয়ের পথ দেখায় জিম্বাবুয়েকে। বাংলাদেশের পক্ষে হাসান মাহমুদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। বাকি উইকেটটি তাইজুল ইসলামের।
এর আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের হয়ে শুরুটা দুর্দান্ত করেছিলেন তামিম ইকবাল। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৬২ রান তোলে বাংলাদেশ, তার মধ্যে তামিম একাই করেন ৫০। কিন্তু তামিমের আগ্রাসন থেমে যায় পরের ওভারেই। তানাকা চিভাঙ্গাকে লেগসাইটে উড়িয়ে মেরেছিলেন। কিন্তু বল চলে যায় সরাসরি ফিল্ডারের হাতে। ৪৫ বলে ঠিক ৫০ রানের মাথায় আউট হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার ইনিংসে চারের মার ১১টি। ছয় বল পর দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের শিকার হয়েছেন এনামুল হক বিজয়ও। তিনি ২১ বলে ২০ রান করেন। এরপর মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত রানের গতি ঠিক রাখতে পারেননি। পাঁচে নামা মাহমুদউল্লাহও ক্রিজে গিয়ে শুরুতে ধুঁকেছেন। তবে আফিফ হোসেন ধ্রুব অন্য প্রান্তে ছিলেন দারুণ সাবলিল। পঞ্চম উইকেটে আফিফ-মাহমুদউল্লাহ ৮২ বলে তোলেন ৮১ রান। ৪১ বলে ৪১ রান করা আফিফ রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা পরেন। আফিফের পর মিরাজের সাথে জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি শেষ দিকে খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে মেহেদি হাসান মিরাজ ১২ বলে ১৫ রানের ছোট একটা ইনিংস খেলে দলকে এগিয়ে নেন। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ৮৪ বলে ৩টি করে চার ছয় মেরে ৮০ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৫৬ রান খরচায় সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন সিকান্দার রাজা। দুই ম্যাচ হেরে এখন বাংলাদেশের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই হয়ে গেছে শেষ ম্যাচ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভোগ্যপণ্যের বাজারে চাপ
পরবর্তী নিবন্ধগাজায় শিশুসহ ৩১ মৃত্যু