চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াই। ব্যাট হাতে ব্যর্থ ভারতের ব্যাটাররা। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ যখন পাকিস্তানের হাতে, নিজের তৃতীয় ওভারে মোড় ঘুরিয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। কোটার শেষ ওভারটি করতে এসেও তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। এমন পারফরম্যান্সে মুগ্ধ রোহিত শার্মা সতীর্থকে বললেন জিনিয়াস। এই পেসারকে পুরো বিশ্বকাপ জুড়েই এমন চেহারায় দেখতে চান ভারত অধিনায়ক। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোববার অল্প রানের পুঁজি নিয়েও পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয় ভারত। ১১৯ রান করে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের তারা থামিয়ে দেয় ১১৩ রানে। রোমাঞ্চকর ম্যাচে তুলে নেয় ৬ রানের জয়। তবে রান তাড়ায় একটা সময় পর্যন্ত ম্যাচ ছিল পাকিস্তানেরই হাতে। দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে লক্ষ্যের এগিয়ে নিচ্ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। শেষ ৩৬ বলে তাদের প্রয়োজন ছিল ৪০ রান। কিন্তু পঞ্চদশ ওভারে আক্রমণে এসে প্রথমে বলেই ৩১ রান করা রিজওয়ানকে বোল্ড করে দৃশ্যপট বদলে দেন বুমরাহ। ওই ওভারে রান দেন কেবল ৩।
শেষ দুই ওভারে যখন পাকিস্তানের চাই ২১ রান, বল হাতে নিজেকে আরেকবার মেলে ধরেন বুমরাহ। দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ৩ রান দিয়ে এবার ফেরান তিনি ইফতিখার আহমেদকে। ম্যাচ শেষে তার বোলিং বিশ্লেষণ, ৪–০–১৪–৩। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেরার পুরস্কার জেতেন ডানহাতি এই পেসার। সতীর্থের এমন পারফরম্যান্স মন জয় করে নিয়েছে রোহিতের। তবে শুধু বুমরাহ নয়, দলের বাকি বোলারদেরও এই জয়ের কৃতিত্ব দিয়েছেন ভারত অধিনায়ক। কারণ তাদের সৌজন্যেই টি–টোয়েন্টিতে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে কম রান ডিফেন্ড করে জয়ের কীর্তি গড়ে তারা। এর আগে সবচেয়ে কম ১৩৮ রান ডিফেন্ড করেছিল তারা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৬ সালে। রোহিতের মতে, বড় টুর্নামেন্টে এমন ম্যাচ জিততে এভাবেই সবাইকে রাখতে হবে অবদান। অবশ্যই এই ধরনের টুর্নামেন্টে এটাই দরকার। আমরা চাই সবাই এগিয়ে আসুক। এই ছোট ছোট অবদানগুলো অনেক বড় পার্থক্য গড়ে দেয়। দলেল যাকে বল দেওয়া হয়েছে তারা দলের জন্য অবদান রাখতে চেয়েছিল।
বুমরাহ ভালো থেকে আরও ভালো হচ্ছে। আমরা তাকে বছরের পর বছর ধরে দেখেছি সে কী করতে পারে। আমি তাকে নিয়ে বেশি কথা বলব না। আমরা চাই বিশ্বকাপের শেষ পর্যন্ত সে এমন মানসিকতার মধ্যে থাকুক। সে বল হাতে জিনিয়াস। আমরা সেটা জানি। কিন্তু অন্যদেরও কুর্নিশ। রোহিত অবশ্য হতাশ নিজেদের ব্যাটিং নিয়ে। ইনিংসে মধ্যভাগ পর্যন্ত বেশ ভালো অবস্থানেই ছিল তারা। ১০ ওভার শেষে রান ছিল ৩ উইকেটে ৮১। কিন্তু সেখান থেকে নাটকীয় ব্যাটিং ধসে পুরো ২০ ওভারই খেলতে পারেনি দলটি। ৯ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে করে কেবল ৩৮ রান। তবে বোলারদের ওপর আস্থা ছিল রোহিতের। আর অধিনায়ককে শেষ পর্যন্ত হতাশ করেননি তার বোলাররা। আমরা যথেষ্ট ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। ইনিংসে মাঝপথে ভালো অবস্থায় ছিলাম। ৩ উইকেটে ৮০। এখান থেকে আপনি বাকিদের জুটি গড়ার আশায় থাকবেন। কিন্তু আমরা প্রয়োজনীয় জুটি গড়তে পারিনি। ভেবেছিলাম, আমরা ১৫–২০ রান কম করেছি। এরকম পিচে প্রতিটি রান কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে আমরা কথা বলেছি। ১৪০ রানের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু মনে হয়েছিল বোলাররা বাকি কাজটা করতে পারবে এবং করেছেও।