বিশ্বকাপ হচ্ছে বিশাল এক স্বপ্ন। সারা জীবনের আরাধনার ধন। বিশ্বকাপ মানে কত স্বপ্নই যেন মুকুলেই ঝরে যায়। বিশ্বকাপ যেমন স্বপ্ন ফুটবলারদের তেমনি স্বপ্ন কোচদের। কিংবা কোচিং স্টাফ, চিকিৎসক কিংবা আয়োজকদের। তবে বিশ্বকাপে সবচাইতে বড় স্বপ্ন সে সব বাঁশিওয়ালাদের যারা সারাজীবন লালন করেন একটা স্বপ্ন বিশ্বকাপের ম্যাচে বাঁশি বাজাবেন। একজন রেফারীর এর চাইতে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে। তবে সে স্বপ্ন খুব বেশি রেফারীর পুরন হয় না। হয়তো সর্বোচ্চ ১০০ জন। তবে বর্তমানে ভি আর নামক নতুন একটি প্রযুক্তি যোগ হওয়ায় সে সংখ্যাটা বেড়েছে।
এবারের কাতার বিশ্বকাপে খেলা পরিচালনা করবেন ৩৬ জন প্রধান রেফারী। ৬৯ জন সহকারী রেফারী। ২৪ জন থাকবেন ভিআর এর জন্য। তবে এই ১২৯ জনের জন্য আলাদা করে আলোচনায় ছয়জন। তারা হচ্ছেন ছয় নারী। প্রথমবারের মতো নারী রেফারিদের বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনা করতে দেখবে গোটা বিশ্ব। এই ছয় জনের মধ্যে তিনজন প্রধান রেফারি হিসেবে ম্যাচ পরিচালনা করবেন। আর বাকি তিনজন থাকবেন সহকারী হিসেবে। কাতার বিশ্বকাপের জন্য রেফারি, সহকারী রেফারি ও ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারিদের (ভিএআর) তালিকা প্রকাশ করেছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। বিশ্বকাপের ৬ জন নারী রেফারির মধ্যে যে তিনজন সরাসরি ম্যাচ পরিচালনা করবেন তারা হলেন জাপানের ইয়োশিমি ইয়ামাশিতা, ফ্রান্সের ফ্র্যাপার্তে ও রুয়ান্ডার সালিমা মুকাসাঙ্গা। এই তিনজন ছাড়াও সহকারী রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ব্রাজিলের নিউজা ব্যাক, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাথরিন নেসবিট ও মেঙিকোর কারেন দিয়াজ মেদিনা।
বিশ্বের সবগুলো ফুটবল খেলুড়ে দেশ যারা ফিফার সদস্য তাদের মধ্য থেকে গত চার বছর ধরে বাছাই করে ৩৬ জন রেফারিকে নির্বাচিত করেছে ফিফা। যেখানে এশিয়া অঞ্চল থেকে রয়েছেন ৬ জন। তারা হলেন স্বাগতিক কাতারের আবদুর রহমান আল জসিম, অস্ট্রেলিয়ার ক্রিস ব্রেথ, ইরানের আলি রেজা ফাগানি, চিনের মা নিং, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবদুল্লাহ মোহাম্মেদ, জাপানের ইউসিমি ইউমাশিতা। এছাড়া এশিয়া অঞ্চল থেকে ১০ জন সহকারী রেফারী এবং ৪ জন ভি আর রেফারি রয়েছে। আফ্রিকা অঞ্চল থেকে জায়গা পাওয়া ছয় রেফারি হলেন গাম্বিয়ার বাকারি পাপা, আলজেরিয়ার মোস্তাফা গরভাল, দক্ষিণ আফ্রিকার ভিক্টর গোমেজ, রুয়ান্ডার সালিমা মুকাসাঙ্গা, জাম্বিয়ার জনি সিকাজো, সেনেগালের মাকুয়াত্তি্ নাদায়ে।
এছাড়া আফ্রিকা অঞ্চল থেকে ১০ জন সহকারী রেফারি এবং ২ জন ভি আর রেফারির দায়িত্ব পেয়েছেন। কানকাকাফ অঞ্চল থেকে ৫জন রেফারি, ১২ জন সহকারী রেফারি এবং তিন ভি আর রেফারির দায়িত্ব পেয়েছে। কানকাকাফ অঞ্চলের ১০ জন রেফারি হলেণ সালভাদরের ইভান ভার্তন, যুক্তরাষ্ট্রের ইসমাইল এলফাত, গুয়েতেমালার মারিও স্কোবার, হন্ডুরাসের সাইদ মার্তিনেস, মেক্সিকোর সিসার রামোস।
লাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে ৭ জন রফোরি, ১৫ জন সহকারী রেফারি এবং ৪ জন ভিআর রেফারির দায়িত্ব পেয়েছেন। এই অঞ্চলের ৭ জন রেফারি হলেন ব্রাজিলের রাফায়েল ক্লস, উরুগুয়ের আন্দ্রেস মাথিয়াস, আর্জেন্টিনার ফার্নন্ডো রাফালিনি, ব্রাজিলের উইলটন সাম্পাইও, আর্জেন্টিনার ফাকান্দো টেল্লু এবং ভেনিজুয়েলার জেসাস ভেলানজুয়েলা। ওশানিয়া অঞ্চলের একজন রেফারি হলেন ম্যাথিউ কনগার। এদের দুজন সহকারী রেফারি রয়েছে। ইউরোপ অঞ্চল থেকে রয়েছে সর্বোচ্চ ১১ জন রেফারি, ২০ জন সহকারী রেফারি এবং ১১ জন ভিআর রেফারি। ইউরোপের ১১ জন রেফারি হলেন রোমানিয়ার ইসভান্ত কোভেক, ফ্রান্সের স্টেফানি ফ্রাপ্পার্ট, নেদারল্যান্ডসের ডেনি মাক্কেলি, পোল্যান্ডের সাইমন মারচিনিয়াক, স্পেনের এন্থনিও ম্যাথিউ, ইংল্যান্ডের মাইকেল অলিভার, ইতালির ডেনিয়েল ওরসাথো, জার্মানির ডেনিয়েল সাইভার্ট, ইংল্যান্ডের অ্যান্থনি টেইলর, ফ্রান্সের ক্লেমেন্টে থারপেন, স্লোভেনিয়ার স্লাভকো ভিনচিচ।