পঞ্চাশ হাজার টনের বেশি চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষা করছে চালবাহী তিনটি জাহাজ। বন্দরের অভ্যন্তরে বার্থিং না পাওয়ায় সরকারি চাল নিয়ে আসা জাহাজ তিনটি বহির্নোঙরে অবস্থান করছে। এদিকে বন্দরে চালসহ খাদ্যশস্যবাহী জাহাজের পণ্য খালাসে বার্থিং সুবিধা বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
জানা যায়, দেশে চালের বাজার অস্থির। মোটা, চিকন, আতপ বা সিদ্ধ সব ধরনের চালের দর ঊর্ধ্বমুখী। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার খোলাবাজারে চাল বিক্রিসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এসব কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করতে খাদ্য মন্ত্রণালয় মিয়ানমার থেকে ২ লাখ টন, থাইল্যান্ড থেকে ১ লাখ টন এবং ভিয়েতনাম থেকে ৩০ হাজার টন চাল কিনে। জিটুজি ভিত্তিতে কেনা এসব চাল ইতোমধ্যে দেশে আসতে শুরু করেছে।
ভিয়েতনামের সরকার থেকে বাংলাদেশ সরকারের কেনা ৩০ হাজার টন আতপ চালের মধ্যে এমভি বিএমসি ক্যাথারিন জাহাজ ২১ হাজার ২শ টন চাল নিয়ে গত ২ নভেম্বর বহির্নোঙরে পৌঁছে। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত জাহাজটি চাল খালাসের জন্য বার্থিং সুবিধা পায়নি।
থাইল্যান্ড থেকে সরকার ২ লাখ টন সেদ্ধ চাল আমদানি করছে। এই চালের মধ্যে এমভি ডিএমসি জুপিটার নামের জাহাজ ২২ হাজার ৫শ টন চাল নিয়ে ৪ নভেম্বর বহির্নোঙরে পৌঁছে। গতকাল পর্যন্ত চেষ্টা করেও জাহাজটি বার্থিং সুবিধা পায়নি। মিয়ানমার থেকে সরকার ২ লাখ টন আতপ চাল আমদানির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে ২১ হাজার ৬শ টন আতপ চালের একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পণ্য খালাস করে চলে গেছে। এই চালানের অংশ হিসেবে এমভি ব্লু লোটাস নামের অপর একটি জাহাজ ১২ হাজার ৫০ টন চাল নিয়ে বহির্নোঙরে পৌঁছে ৬ নভেম্বর। এই জাহাজটি গতকাল পর্যন্ত বন্দরে বার্থিং সুবিধা পায়নি।
সরকারিভাবে আমদানি করা চালগুলো নিয়ে বহির্নোঙরে অবস্থান করছে তিনটি বিদেশি জাহাজ। এসব চাল সাইলো ও দেওয়ানহাট সিএসডিতে মজুদ করার কথা রয়েছে। সরকারের ওএমএস, কাজের বিনিময়ে খাদ্যসহ বিভিন্ন গণমুখী কাজে এসব চাল ব্যবহারের কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থে দুটি জেটিতে খাদ্যশস্য খালাস করা হয়। ওই দুটি জেটি ব্যস্ত থাকায় চালবাহী জাহাজগুলোকে বার্থিং দেয়া সম্ভব হয়নি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে বন্দরের জেসিবি ২ এবং ৩ নম্বর বার্থের পাশাপাশি আরো দুটি জেটি চাল খালাসের জন্য বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র বলেছে, অপেক্ষাকৃত ছোট ছোট কিছু জাহাজে মিয়ানমার থেকে চাল আসছে। এগুলো নির্মাণাধীন পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনালে খালাস করা হচ্ছে। কিন্তু বড় জাহাজগুলো ওই জেটিতে বার্থিং দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হলেও ট্রাক সংগ্রহসহ কিছু জটিলতা তৈরি হওয়ায় সেটি সম্ভব হয়নি। সরকারি এসব চাল দ্রুত খালাস করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে বন্দরের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।