বাংলাদেশের বিশ্বকাপ নিশ্চিতে ক্রিকেটারদের সঙ্গে স্বস্তিতে কোচ ও নির্বাচক

স্পোর্টস ডেস্ক | রবিবার , ২০ এপ্রিল, ২০২৫ at ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ

ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে গতকাল শনিবার হেরেছিল বাংলাদেশ নারী দল। তবে হেরে গিয়েও নিগার সুলতানা জ্যোতিরা ছিটকে যায়নি বিশ্বকাপের দৌড় থেকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের বড় হারের পরেও বিশ্বকাপের টিকিট কেটে ফেলল বাংলার বাঘিনীরা। আর এমন জয়ের পর সেটার জন্য কৃতিত্ব পেতেই পারে থাইল্যান্ড নারীরা। নাত্তাখাম চাংথামের এক ফিফটিতে ভর করে উইন্ডিজ নারীদের বিপক্ষে থাইল্যান্ডের স্কোর হয় ১৬৬। পরে মাঝারি সংগ্রহ তাড়া করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। সেখানে সমীকরণ দাঁড়ায় এমন যে ক্যারিবিয়ান মেয়েরা যদি ১০.১ ওভারের মাঝে ১৬৭ রান স্পর্শ করতে না পারে তাহলে বাংলাদেশ যাবে বিশ্বকাপে। অন্যথায়, ক্যারিবিয়ান মেয়েরাই হাতে পাবে বিশ্বকাপের টিকিট। তবে শেষ দিকে ছয় হাঁকানোর সাপেক্ষে লক্ষ্যমাত্রা যেতে পারে ১১ ওভার পর্যন্ত। বিকেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের পর বাংলাদেশের নেট রানরেট তখন নেমে এসেছে ০.৬৪ এ। বিপরীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানরেট তখন .২৮। ম্যাচের ১১তম ওভারের ৫ম বলে চার এবং ৬ষ্ঠ বলে ছক্কা হলেই কেবল বিশ্বকাপে যেত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু সরাসরি ছয় হাঁকানোর ফলে ম্যাচ জিতলেও সেটা আর উইন্ডিজ নারীদের পক্ষে থাকেনি। নেট রানরেটে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশ চলে গেল নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে। এই ম্যাচের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারীদের নেট রানরেট ০.৬২৬। আর বাংলাদেশের নেট রানরেট ০.৬৩৯। বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ নিশ্চিতের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নারী দলের সঙ্গে থাকা ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প। পাকিস্তান থেকে তিনি বলছিলেন, ‘আমরা ম্যাচ শেষে হোটেলে ফিরে এসেছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই খেলোয়াড় এবং সাপোর্ট স্টাফরা বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জনে খুব খুশি।’ কোয়ালিফায়ার টুর্নামেন্টে বড় দুটি দলের বিপক্ষে হেরেছে বাংলাদেশের নারীরা। এ নিয়ে জানতে চাইলে হেম্প বলেন, ‘যে দুই ম্যাচের কথা বললেন উভয় খেলাতেই আমরা মাঝে মাঝে বেশ ভালো পজিশনে ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত অন্যান্য সময়ে আমাদের অধারাবাহিকতার কারণে প্রতিপক্ষ দল আবার খেলায় ফিরে যায়। তবে খেলোয়াড়দের এই টুর্নামেন্ট থেকে সাহসী এবং আত্মবিশ্বাস হওয়া উচিত। কারণ সামগ্রিকভাবে তারা ব্যক্তিগত এবং সম্মিলিতভাবে খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছে।’ নারী দলের এই দলটাকে কোচদের পাশাপাশি খুব কাছ থেকে দেখে থাকেন আরেক জন। তিনি দলটির নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ শিপন। খেলোয়াড় বাছাই থেকে অনুশীলন শিপনের নজরে থাকে ক্রিকেটারদের পারফর্মম্যান্স। তাইতো বিশ্বকাপ নিশ্চিতের পর অনূভুতি জানিয়ে বলেছেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচার কথা। শিপন শুরুতেই বলছিলেন, ‘হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছি। কেবল একটা বল এদিক সেদিকে হলেই আমরা বাদ পড়তাম। খুব টেনশনে ছিলাম, শেষ ত্রিশ মিনিট গাড়ির ভিতরে বসে খেলা দেখেছি, পার্ক করে। এক মিনিটও নড়িনি, এরপর শেষ হলে আমরা কোয়ালিফাই করছি, যখন শুনছি তারপরে গাড়ি ছাড়লাম।’ এরপরেই এই নির্বাচক বললেন, ‘অনুভূতি তো অবশ্যই ভালো, কোয়ালিফাই করছি ভালো লাগা থাকবেই। গতবারও কিন্তু আমরা কোয়ালিফাই খেলে তারপর বিশ্বকাপে গিয়েছিলাম। এরকম একটা কঠিন ম্যাচের পরিবেশ পার করে তারপরে গিয়েছিলাম। এ বছর আমরা প্রথম তিনটা ম্যাচ ভালো করেছিলাম। শেষ দুইটা ম্যাচ ভালো করতে পারি নাই, বড় দলের বিপক্ষেই হারতে হয়েছে। আমরা এখানেই ফেল করছি, এটা নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে, কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে।’ দলের ফিল্ডিং এবং বোলারদের নিয়ে বার্তা দিয়ে শিপন বললেন, ‘ফিল্ডিংয়ের অনেক উন্নতির জায়গা রয়েছে। ভালো বোলিং সাইড দলের বিপক্ষে রান করার উন্নতির দরকার রয়েছে। এটা নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে, এছাড়া সিঙ্গেল বের করার ক্ষমতাটা রাখতে হবে। আমাদের দলের বিপক্ষে বিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানরা গ্যাপ বুঝে বুঝে খেলছে, সেই রানগুলো আমরা ঠেকাতে পারিনি।’ জ্যোতিসুপ্তাদের উপর খুশি থাকলেও টপ অর্ডার থেকে আরো রানের আশা ছিল শিপনের, ‘দলের যে দুজনের উপরে সবচেয়ে বেশি ভরসাটা ছিল তারা ভালো করেছে। আজকের ম্যাচটা বাদে, জ্যোতির আউটটা আমার মনে হয় না ছিল। যদি ভালো করেছে সে, সুপ্তা ভালো করছে। তবে টপ অর্ডারের ব্যাটারদের থেকে আরও বেশি রান থেকে আশা করেছিলাম।’ দেশের মাটিতে বাংলাদেশের বোলাররা থাকেন সেরাদের সেরা। তবে বিদেশের মাটিতে এই টুর্নামেন্টে বোলাররা নিজেদের প্রমাণে ব্যর্থ। শিপন বললেন, ‘আমরা দেশের মাটিতে যখন খেলি তখন আমাদের বোলাররা অনেক হেল্প পায় সত্যি কথা বলতে, এটা মিথ্যা কথা বলার কিছু নেই। এটা আমাদের পুরুষ দলের ক্ষেত্রেও সেইম হয়। যখন দেশের বাইরে যায় তখন আসলে আমাদের তখনকার অবস্থা অনুযায়ী বোলিং করাটা শিখতে হবে, ডট বল বা ভালো এরিয়াতে কিভাবে বল করা যায় সেটা শিখতে হবে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো করার সামর্থ্য রাখে জিম্বাবুয়ে : আরভিন
পরবর্তী নিবন্ধমেয়র একাডেমি কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন