ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়(১৯০৪–১৯৭৫)। ছিলেন একজন খ্যাতনামা বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক ও সম্পাদক। এটি তার ছদ্মনাম। তার ছদ্মনামের আড়ালে ঢেকে গেছে তার আসল নাম। তার আসল নাম তারাপদ মুখোপাধ্যায়। তার নিজ গ্রামটিও এখন ফাল্গুনী পল্লী নামেই পরিচিত। তার ছদ্মনাম বা লেখক নাম দেখে অনেকেই বিভ্রান্ত হওয়াই স্বাভাবিক। তার ছদ্মনাম দেখে মনে হয় তিনি একজন মহিলা। তার বিখ্যাত উপন্যাস চিতা বহ্নিমান ও শাপমোচন। এই দুটি উপন্যাস তার পাঠক সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মার্চ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। হেতমপুর কলেজে আই.এ. পড়ার সময়ই রাজরোষে পড়েন। পরে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। তিনি ছিলেন বঙ্গলক্ষ্মী মাসিকপত্রের সম্পাদক। সেখান থেকেই তার সাহিত্য জীবন শুরু হয়। তার রচিত অন্যতম এবং বহুপঠিত দুটি উপন্যাস চিতা বহ্নিমান ও শাপমোচন। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে শাপমোচন উপন্যাস অবলম্বনে পরিচালক সুধীর মুখার্জি উত্তম কুমার–সুচিত্রা সেন জুটিকে নিয়ে একই নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।
তার অন্যান্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে আকাশ বনানী জাগে(১৯৪৩), আশার ছলনে ভুলি(১৯৫০), ‘বহ্নিকন্যা’(১৯৫১), ‘ভাগীরথী বহে ধীরে’(১৯৫১), ‘মন ও ময়ূরী’ (১৯৫২), ‘জলে জাগে ঢেউ’(১৯৫৪), ‘মীরার বধূয়া’(১৯৫৬), ‘স্বাক্ষর’(১৯৫৭), ‘চরণ দিলাম রাঙায়ে’(১৯৬৬) উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া প্রকাশিত হয় তার রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থ হিঙ্গুল নদীর কূলে(১৯৩৫) ও কাশবনের কন্যা(১৯৩৮), শিশু সাহিত্য/ গোয়েন্দা উপন্যাস ‘পাতালের পাকচক্র’, ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’, ‘কালো রুমাল’। তিনি ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ শে এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।