পটিয়ায় প্রতিবেশীই যখন শিশু আয়াতের অপহরণকারী

পটিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:৩১ অপরাহ্ণ

পটিয়ায় ৫ লাখ টাকার লোভে প্রতিবেশীই হয়ে উঠলো শিশু আয়াতের অপহরণকারী। চিপস ও আচারের লোভ দেখিয়ে মো. আয়াত নামের ৪ বছর বয়সী এক শিশুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনা ঘটে তারই প্রতিবেশীর মাধ্যমে।

ঘটনায় দুই অপহরণকারীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। তারা হলেন, পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের বাড়ৈকারা গ্রামের মো. আফছারের ছেলে মো. হৃদয় (৩০) ও কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ছিরার টেক এলাকার নাসির আহমদের ছেলে রাসেল (১৯)।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের সহায়তায় অপহৃত শিশু মো. আয়াতকেও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই শিশু উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের বাড়ৈকারা গ্রামের প্রবাসী মাহাবুল আলমের ছেলে। গেল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাড়ির সামনে থেকে আয়াতকে অপহরণ করা হয়।

শিশু আয়াতের চাচা মো. হাবিবুল্লাহ জানান, ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে আয়াত বাড়ির সামনে রাস্তার উপর খেলছিল। সন্ধ্যার পরও সে বাড়িতে না ফেরায় সবাই তাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। পুকুরে পড়ে গেছে ভেবে বাড়ির আশপাশের সব পুকুরে জাল ফেলে তাকে খোঁজা হয়।

এদিকে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে আমাদের পরিবারের নাম্বারে ফোন করে জানানো হয় আয়াতকে অপহরণ করা হয়েছে। তাকে জীবিত ফেরত পেতে হলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। পরে আমি ওই নাম্বারে ফোন করে কথা বললে অপহরণকারী মো. হৃদয়ের কন্ঠস্বর চিনতে সক্ষম হয়।

হৃদয় আমাদের প্রতিবেশী। তবুও বিষয়টি তাকে বুঝতে না দিয়ে আমরা থানায় যোগাযোগ করি। অন্যদিকে আমাদের প্রতিবেশীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে কৌশলে হৃদয়কে ফোন করে আয়াতকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে তাকেসহ খোঁজার জন্য গ্রামে আসতে বলে। তাদের কথামত হৃদয় এলাকায় আসলে লোকজন তাকে ধরে ফেলে।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে আয়াতকে সে অপহরণ করে কর্ণফুলী চরলক্ষ্যা এলাকায় তার বন্ধু রাসেলের বাসায় আটকে রেখেছে।

পরবর্তীতে স্থানীয় জনতা কৌশলে হৃদয়কে দিয়ে রাসেলকে ফোন করে অপহৃত শিশু আয়াতকে শান্তিরহাট এলাকায় এনে দিতে বলে। হৃদয়ের কথামতো রাসেল শিশু আয়াতকে নিয়ে শান্তির হাট আসলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা জনতা আরেক অপহরণকারী রাসেলকে ধরে ফেলে এবং তার কাছ থেকে আয়াতকে উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা অপহরনকারী হৃদয়কে গণপিটুনি দেয়। পরবর্তীতে শিশু আয়াতের পরিবার ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুই অপহরণকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

এ ঘটনায় শিশু আয়াতের চাচা মো. হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে গত ৫ নভেম্বর পটিয়া থানায় মো. হৃদয় (৩০) ও রাসেল (১৯) সহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পটিয়া থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. জুয়েল উদ্দিন বলেন, চিপস ও আচারের লোভ দেখিয়ে শিশু আয়াতকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করার ঘটনায় স্থানীয় জনতা দুইজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। অপহৃত শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ মামলার তদন্ত চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদ্রুতগামী বাসের ধাক্কায় লোহাগাড়ায় বাইক আরোহীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধব্যতিক্রমী আয়োজনে চুয়েটে ফুটসাল টুর্নামেন্ট