নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে আরো বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্তশ্রেণী। আয়ের সাথে ব্যয়ের ব্যবধানে দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় সংসার চালাতে নাভিশ্বাস উঠেছে অধিকাংশের। অন্যদিকে নিম্নবিত্তের খাবারের প্লেট থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে সবজি। কারণ বাজারে এখন ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নাই। আলু ভর্তা ডিম খাবে, সেখানেও বেড়েছে খরচ। আলুর কেজি এখন ৬৫ এবং ডিমের ডজন ১৬০ টাকা। এছাড়া মশুর ডালের কেজি ১৪০ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করে, আবার চুপ হয়ে যায়। এতে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করেই চলেছে।
গতকাল নগরীর কাজীর দেউড়ি ও ২নং গেট এলাকার কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের সবজির বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ টাকায়। এছাড়া টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। অপরদিকে শসা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা এবং কাকরল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। এছাড়া লাউ ৫০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, তিতা করলা ১০০ টাকা ও কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।
অন্যদিকে মুদি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, রসুন ৯০ টাকা, আদা ২৬০ টাকা ও প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা। এছাড়া নাজিরশাইল সিদ্ধের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ ৬০ টাকা, নাজিরশাইল অর্ধ সিদ্ধ ৭০ টাকা, মিনিকেট আতপ ৬৫ টাকা, কাটারিভোগ আতপ ৮০ টাকা, কাটারি সিদ্ধ ৭৮ টাকা এবং চিনিগুড়া চাল বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়।
সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আজম দৈনিক আজাদীকে বলেন, বৃষ্টির কারণে সবজির ফলন নষ্ট হয়েছে শুনেছি। বর্তমানে সবজির সরবরাহও কমে গেছে। তাই দাম বেশি।
এদিকে মাছ বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি লইট্টা বিক্রি হচ্ছে ২৫০–২৭০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, চিংড়ি আকারভেদে ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়, রূপচাঁদা আকার ভেদে ৬৫০ থেকে ১ হাজার টাকা, দেশী রুই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, শিং ৮০০ টকাা, কাতাল ৩৮০–৪৫০ টাকা, কৈ ২৫০–৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০–২৫০ টাকায়। এছাড়া মাংসের বাজারে প্রতি কেজি গরু বিক্রি হচ্ছে হাঁড় ছাড়া ৮৫০ টাকা এবং হাঁড়সহ ৭৫০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা এবং দেশি মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫২০ টাকায়।
বেসরকারি স্কুল শিক্ষক ইলিয়াছ উদ্দিন বলেন, স্কুল থেকে যে বেতন পাই, এতে সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়ে টিউশন করতে হয়। তারপরেও যে আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বাজারে চাল, ডাল, তেল–চিনি থেকে শুরু করে এমন কোনো পণ্য নেই যে দাম বাড়েনি। এছাড়া ৫০–৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। এভাবে চলতে থাকলে এ বছর শেষে পরিবারের সদস্যদের গ্রামে পাঠিয়ে দিতে হবে।
দিনমজুর আবু আলী বলেন, প্রতি মাসে খরচ বাড়ছে। যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। সংসারে ৬ জন সদস্য। আলু–ডিম কিনতেও অনেক টাকা লাগছে, এক ডিম তিন চারজনে ভাগ করে খাচ্ছি।