নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত নিউজিল্যান্ড ম্যাচে রান আউট নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। দ্রুত দ্বিতীয় রান নেওয়ার চেষ্টায় ক্রিজে পৌঁছতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের অ্যামিলিয়া কার। এর আগেই হারমানপ্রিত কৌরের থ্রো ধরে স্টাম্প এলোমেলো করে দেন রিচা ঘোষ। আউট ধরে নিয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা ধরেন অ্যামিলিয়া। সীমানার কাছে তাকে থামান চতুর্থ আম্পায়ার। জানালেন আউট হননি অ্যামিলিয়া, আগেই ডেড হয়ে গেছে বল। আর এই ঘটনা মেনে নিতে পারলেন না হারমানপ্রিত। প্রথমে মাঠের দুই আম্পায়ার, পরে সীমানার কাছে গিয়ে চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গেও উত্তেজিত হয়ে কথা বললেন ভারত অধিনায়ক। তবে শেষ পর্যন্ত অ্যামিলিয়ার পক্ষেই থাকে সিদ্ধান্ত। কারণ দ্বিতীয় রান নিতে শুরুর আগেই ‘ওভার’ ডেকে ফেলেছিলেন আম্পায়ার। নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুক্রবার ভারত–নিউজিল্যান্ড ম্যাচের প্রথম ইনিংসের ঘটনা এটি। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ডেড বল ও ওভার ডাকার ঘটনায় কয়েক মিনিট বন্ধ থাকে খেলা। ভীষণ ক্ষুব্ধ হলেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে খেলা শুরু করে হারমানপ্রিতের দল। ১৪তম ওভারে দিপ্তি শার্মার শেষ বল লং অফের দিকে খেলে এক রান নেন অ্যামিলিয়া। বল ধরে থ্রো না করে নিজের হাতে রেখেই উইকেটের কাছে আসতে থাকেন হারমানপ্রিত। তখন ওভার ডেকে দিপ্তিকে ক্যাপও ফেরত দিয়ে দেন আম্পায়ার। কিন্তু দ্বিতীয় রানের সুযোগ ভেবে দ্রুত দৌড় শুরু করেন অ্যামিলিয়া ও সোফি ডিভাইন। বোলিং প্রান্তে ডিভাইন যথাসময়ে পৌঁছে গেলেও পারেননি অ্যামিলিয়া। পরিষ্কার আউট হওয়ায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা শুরু করেন ২১ বলে ১৩ রানে থাকা অ্যামিলিয়া। তখনই ঘটে আলোচিত ঘটনা। কিউই ব্যাটারকে থামিয়ে দেন চতুর্থ আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গে মাঠের আম্পায়ারদের কাছে ছুটে যান হারমানপ্রিত। তখন তাকে হয়তো বোঝানো হয় যে, আম্পায়ার ওভার ডাকার সঙ্গে সঙ্গে ডেড হয়ে গেছে ওই ডেলিভারি। তাই এর পরের কোনো ঘটনা আর ধর্তব্য নয়। এমসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনের ২০.১ অনুচ্ছেদে বলা আছে এই নিয়মের কথা। শুরুতে তা মানতে পারেননি ভারত অধিনায়ক। এমনকি সীমানার কাছে থাকা কোচ অমল মজুমদারকেও দেখা যায় রাগান্বিত অবস্থায়। তিনি চতুর্থ আম্পায়ারের কাছে গিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। তখন হারমানপ্রিতও ছুটে যান সীমানার কাছে। তাতে কোনো লাভ হয়নি। চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলা শেষে খেলা শুরু করতে চলে আসেন তিনি। এখানেই শেষ নয় ঘটনা! ওভারের শেষ বলে ১ রান নেওয়ায় নতুন ওভারের প্রথম বলে স্ট্রাইকে থাকার কথা ছিল অ্যামিলিয়ার। কিন্তু রেনুকা সিংয়ের ওভারে প্রথম বল মোকাবিলা করেন ডিভাইন। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি মাঠের দুই আম্পায়ার। পরে ওই ওভারের প্রথম বলে ১ রান নিয়ে অ্যামিলিয়াকে স্ট্রাইক দেন ডিভাইন। দ্বিতীয় বলেই ক্যাচ আউট হয়ে যান অ্যামিলিয়া। অর্থাৎ রান আউট থেকে বাঁচার পর আর কোনো রান তিনি যোগ করতে পারেননি। ওই ঘটনা সামলে ম্যাচে বড় জয়ই পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। ডিভাইনের ৩৬ বলে ৫৭ রানের ঝড়ো ইনিংসের সৌজন্যে তারা আগে ব্যাট করে তোলে ১৬০ রান। জবাবে ১৯ ওভারে ১০২ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। কিউইরা পায় ৫৮ রানের জয়। বিশ্বকাপে প্রথম দিনে পাকিস্তান–শ্রীলংকা ম্যাচেও দেখা গেছে ডেড বল নিয়ে অন্যরকম এক ঘটনা। শ্রীলংকার ইনিংসের ১৩তম ওভারে নাশরা সান্ধুর বলে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারেননি নিলাকশিকা সিলভা। এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নেন নিলাকশিকা। টিভি আম্পায়ার রিপ্লে দেখার সময়, দেখতে পান বল ছাড়ার সময় সান্ধুর কোমরে গুজে রাখা রুমাল নিচে পড়ে গেছে। তাই এটি ব্যাটারের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে মর্মে, ডেলিভারিটি ডেড বল ঘোষণা করা হয়। বেঁচে যান নিলাকশিকা।