রাউজান উপজেলার ডাবুয়া খালের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে সুবিধা মতো পানি ধরে রাখছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এতে কেউ পানি নিয়ে ভালো মতো চাষাবাদ করছে আবার কেউ পানির অভাবে পারছে না। ফলে কারো পৌষ মাস আবার কারো সর্বনাশ হচ্ছে। তাই খালের পানির উপর নির্ভরশীল কৃষকদের মাঝে পানির ভাগাভাগি নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা এক স্রোতা খালটির উপড়ের দিকে কয়েকটি জায়গায় বাঁধ দিয়ে পানি ধরে রেখেছে প্রভাবশালীরা। খালের মাঝে দেওয়া বাঁধের কারণে নিচের দিকে থাকা শত শত কৃষকের ক্ষেত খামার পানির অভাবে শুকিয়ে মরছে। খালটির পানির প্রবাহ মূলত পাহাড়ি অঞ্চল থেকে। রাউজানের ডাবুয়া, হলদিয়া, চিকদাইর, গহিরা ইউনিয়নের কয়েক হেক্টর জমির চাষাবাদ এই খালের পানি উপর নির্ভরশীল।
উপড়ের দিকে থাকা হলদিয়া ইউনিয়নের বিন্দাবন, জানি পাথর ও বৃক্ষবানুপুরের একাধিকস্থানে বাঁধ দিয়ে রাখায় নিচের দিকের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার খাল পানির অভাবে শুকিয়ে আছে। তিনটি ইউনিয়নের শত শত কৃষকের ক্ষেত খামার পানির অভাবে শুকিয়ে মরছে। পরিদর্শনকালে দেখা যায়, এই খালে মধ্যখানে বড় বাঁধটি দিয়ে রেখেছে হলদিয়া ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার শাহজাহান। এই বাঁধটি দেয়ার ফলে উপড়ের দিকে খালটি পানিতে টইটুম্বর হয়ে আছে। নিচের দিকে কয়েক কিলোমিটার খাল শুকিয়ে আছে। পানি বঞ্চিত কৃষকদের অভিযোগ বাঁধ দিয়ে আটকে রাখা পানির সুবিধা নিচ্ছে ওই এলাকার কৃষক ছাড়াও কয়েকটি ইটভাটা।
ডাবুয়া এলাকার পানি বঞ্চিত কৃষকদের মধ্যে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, জামাল, বাবুল, মঈন মিলে ৭৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তাদের দাবি ৫০ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিয়ে চাষাবাদে নেমে তারা তরমুজ চাষ করেছেন। পানির সেচ দিতে না পারায় ক্ষেতের চারা শুকিয়ে যাচ্ছে। বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় এক কিলোমিটার দূরের পুকুর ডোবা থেকে পাইপে পানি টেনে এনে ক্ষেত বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন ভবিষৎ নিয়ে শঙ্কার মধ্যে আছি।
আবুল কাসেম নামে অপর এক কৃষক বলেছেন, আড়াই একর জমিতে মৌসুমী ক্ষেত খামার করেছি। পানির সেচ দিতে না পারায় এখন রোপণ করা চারা লালচে রং ধারণ করেছে।
খালে বাঁধ দিয়ে রাখার বিষয়ে হলদিয়ার সাবেক মেম্বার শাহজাহান বলেন, আমি একশত ২০ কানি জমিতে চাষ করছি। পানির ভাগাভাগি নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের উপস্থিতিতে এলাকার কৃষকদের মধ্যে সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে বাঁধটি দিয়েছি, সেই বাঁধের নিচে পানি প্রবাহের জন্য মোটা পাইপ দেওয়া হয়েছে। তবে পরিদর্শনের সময় দেখা যায় ওই বাঁধের নিচে কোনো পাইপ দেয়া নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, নিচের দিকে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা রেখে শাহজাহান মেম্বারকে নিচু করে বাঁধ দেয়ার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছিল। নিচের পানি প্রবাহের ব্যবস্থা রাখা না হলে বাঁধ কেটে দেয়া হবে।