কাপ্তাই হ্রদে ২৫ এপ্রিল থেকে তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ

রাঙামাটি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রশাসন। কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এক বৈঠক থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে হ্রদের মাছ বাজারজাতসহ স্থানীয় বরফকলগুলোও বন্ধ থাকবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাঙামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জোবাইদা আক্তার, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অধীর চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট রাঙামাটি নদী উপকেন্দ্রের প্রধান ও উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক হায়দার, রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়াসহ অন্যান্য মৎস্য ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে জানানো হয়, চলতি বছর কাপ্তাই হ্রদের পানি তাড়াতাড়ি কমতে থাকায় নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ আগেই হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্বল্প পানিতে মাছ ধরলে হ্রদের ছোট মাছ ব্যাপকহারে ধরা পড়ে। এতে করে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও উৎপাদনে ভাটা পড়ে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের পহেলা মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন। তবে গেল বছর কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ের ১২ দিন আগেই বন্ধ করা হয় মাছ আহরণ। আবার তিনমাসের নির্ধারিত সময়ে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় দুই দফায় আরও ১ মাস ১২ দিন বন্ধের সময় বর্ধিত করা হয়। ৪ মাস ১২ দিন মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে কাপ্তাই হ্রদে ফের মাছ আহরণ শুরু হয়। এবারও নির্ধারিত সময়ে ছয়দিন আগেই মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) তথ্যমতে, কাপ্তাই হ্রদে উৎপাদিত মাছের ৯০৯৫ শতাংশই ছোট প্রজাতির। ছোট প্রজাতির মাছের মধ্যে কেচকি, চাপিলা ও মলা মাছের আধিক্য রয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের রক্ষণাবেক্ষণ ও মাছ চাষের দায়িত্বে রয়েছে বিএফডিসি। সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রজাতিভিত্তিক মৎস্য বিবরণীতে কাপ্তাই হ্রদ থেকে ছোটবড় মোট ৪৪ প্রজাতির মাছ আহরণের তথ্য রয়েছে। এরমধ্যে ২৭ প্রজাতি বড় মাছ ও ১৭ প্রজাতির রয়েছে ছোট মাছ। মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে, রাঙামাটির রাজস্থলী ও কাউখালী ছাড়া বাকি আট উপজেলা ও খাগড়াছড়ির দীঘিনালা এবং মহালছড়ি উপজেলা মিলে কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্ভরশীল প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমালিককে খুনের দায়ে কর্মচারীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধশারজাহ বিমানবন্দরে আটকা চট্টগ্রামের ১৫০ যাত্রী