সিটি মেয়রকে ‘কটূক্তি ও মানহানি’ করায় চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি নুরুল আবছারকে ক্ষমা চাইতে বললেন কাউন্সিলররা। অন্যথায় উচিত জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। এতে বক্তব্য রাখেন সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শৈবাল দাশ সুমন, জহর লাল হাজারী, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের ও হুরে আরা বিউটি। এদিকে সভাপতির বক্তব্যকে ইস্যু বানিয়ে ভাড়ার ভিত্তিতে ধার্যকৃত গৃহকর বাতিলের আন্দোলনকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আমির উদ্দিন। তিনি আজাদীকে বলেন, আবছার ভাই মেয়রকে কোনো গালি দেননি। এরপরও পরদিন আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি। আমাদের দুঃখ প্রকাশ করার পরও কাউন্সিলরগণ ক্ষমা চাইতে বলছেন। এর মাধ্যমে তারা গণদাবিকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, সাধারণ জনগণ কর্পোরেশনের ভাড়ার ভিত্তিতে ধার্যকৃত গৃহকর মেনে নেয়নি। আমরা ১৯৮৬ সালের করবিধি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। কাউন্সিলরদের উচিত ছিল জনগণের পাশে থাকা। কিন্তু তারা জনগণের পাশে না থেকে উল্টো গণদাবিকে আড়াল করতে চাচ্ছেন। আমাদের আহ্বান থাকবে তারা যেন জনগণের পাশে থাকেন।
গতকাল মানববন্ধনে ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম বলেন, যে কোনো বিষয়ে নগরবাসী দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। সে বিষয়ে যুক্তিসঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অধিকার সবার আছে। তবে করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি যে ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন তা অশালীন ও অবমাননাকর। আন্দোলনকারীদের আন্দোলনে কোনো বাধা নেই। তবে মেয়রের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে শুধু মেয়রকে অপমানিত করা হয়নি, ৭০ লাখ নগরবাসীকেও অপমান করেছেন নুরুল আবছার।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেকে তাদের বকেয়া কর পরিশোধ করে আপিল করেছেন এবং আপিলে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি যখন মীমাংসার পর্যায়ে আসছে ঠিক তখনই একটি কুচক্রী মহল তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার মানসে আন্দোলন-সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছে। তারা সিটি কর্পোরেশন ও জনসাধারণকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এ ধরনের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং করদাতা সুরক্ষা পরিষদের নেতৃবৃন্দকে ক্ষমা প্রার্থনাসহ ষড়যন্ত্র পরিহারের আহ্বান জানাচ্ছি।
প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, কাউন্সিলরগণ জনগণের বিরুদ্ধে নন। গৃহকর সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য স্বয়ং মেয়র নির্দেশনা দিয়েছেন। কাউন্সিলররাও গৃহকরের বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সভায় আলোচনা করেছেন। তাই করদাতা সুরক্ষা পরিষদকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, নগরবাসীকে বিভ্রান্ত করবেন না। মেয়রের বিরুদ্ধে আবার কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেওয়া হলে জবাব দেওয়া হবে।
দেওয়ান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতির উদ্দেশে বলেন, যত দ্রুত পারেন মেয়রের কাছে এসে ক্ষমা চান। না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি ক্ষমা না চান তাহলে উচিত জবাব দেওয়া হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর গাজী মো. শফিউল আজিম, মো. শাহেদ ইকবাল বাবু, মো. শফিকুল ইসলাম, এম. আশরাফুল আলম, মো. মোবারক আলী, মো. মোরশেদ আলম, ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, মো. ইসমাইল, নুর মোস্তফা টিনু, মোহাম্মদ শহিদুল আলম, মোহাম্মদ সলিম উল্ল্যাহ, মোহাম্মদ জাবেদ, নাজমুল হক ডিউক, মো. ইলিয়াছ, মো. শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী, আতাউল্লাহ চৌধুরী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, পুলক খাস্তগীর, হাজী নুরুল হক, মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, ছালেহ আহমদ চৌধরী, জোবাইরা নার্গিস খান, জেসমিন পারভীন জেসী, তছলিমা বেগম, শাহীন আকতার রোজী, রুমকী সেনগুপ্ত, নীলু নাগ, ফেরদৌসী আকবর, লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবী ও শাহনুর বেগম।