চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, সমাজে যারা প্রতিষ্ঠিত তাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। সমাজ সেবায় একুশে পদকপ্রাপ্ত রফিক আহামদকে একইভাবে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। ত্যাগ স্বীকার করেই আজকে উনি প্রতিষ্টিত হয়েছেন। এই চট্টগ্রামে অতীতেও অনেক জ্ঞানী–গুণিজনের জন্ম হয়েছে। এই চট্টগ্রাম বা দেশের উন্নয়নে তারা অনেক ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু এদের কজনকে এখন আমরা স্মরণ করি। তবে যারা পৃথিবীতে যারা ভালো কাজ করেছে, ইতিহাস তাদের মনে রেখেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ‘একুশে পদকপ্রাপ্তিতে আলহাজ্ব রফিক আহামদকে নাগরিক সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র বলেন, আপনারা জানেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও আরো সেবা সংস্থা আছে। তবে এদের মধ্যে সিটি মেয়রই একমাত্র জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত। যেহেতু আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত মেয়র, তাই এই নগরীতে জলাবদ্ধতা–যানজট কিংবা যেকোনো নাগরিক দুর্ভোগ হলে আমার দিকে আঙ্গুল উঠবে এটি আমি জানি। তবে এই নগরীকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন করতে হলে আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। পাঁচতলার বাসা থেকে নালায় ময়লা আবর্জনা ছুড়ে ফেলা হচ্ছে। আজকে নালায় পলিথিনে ভর্তি। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৯ ফুট পলিথিনের আস্তরণ। নাব্যতা হারাচ্ছে কর্ণফুলী। এই নগরীকে সুন্দর করার একজন রিকশা চালকের পরামর্শ শুনতেও আমি রাজি আছি। রিকশা চালকের পরামর্শ যদি আমার মনঃপুত হয়, তবে আমি সেটিই গ্রহণ করব। আমি কিছুদিন আগে জাপানের টোকিও শহরে গিয়েছি। সেখানে ২ কোটি মানুষের বসবাস। কিন্তু কোথাও আমি এক টুকরো কাগজ পড়ে থাকতে দেখলাম না। আমি দেখে অবাক হয়েছি, রাস্তায় এক বৃদ্ধ হেঁটে যাওয়ার সময় কিছু শুকনো পাতা পড়ে থাকতে দেখে, তিনি সেগুলো কুঁড়িয়ে নিয়ে ডাস্টবিনে ফেললেন। চট্টগ্রাম নাগরিক সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর মু. সিকান্দর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরে পরিচালক কাজী নাজিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক লায়ন মনজুর আলম মনজু, চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন নাসির উদ্দিন চৌধুরী, আইডিএফের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম, চট্টগ্রাম–এডাব’র সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, নিষ্কৃতির প্রধান নির্বাহী কবি খুরশীদ আনোয়ার।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন, সাবেক সংসদ সদস্য সাবিহা মুসা, মা ও শিশু হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ মোরশেদ হোসেন, কবি অভিক ওসমান, মমতার সভাপতি লায়ন জাহাঙ্গীর আলম জোসেফ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগরের সিনিয়র সহ–সভাপতি আশফাক আহমেদ, আলহাজ্ব রফিক আহামদের ছেলে তৌহিদ আহমেদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রফিক আহামদ চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জন্য কাজ করেছেন। মানবকল্যাণে তিনি একজন পথিকৃত ও সমাজে নিবেদিত হয়ে কাজ করা মানুষের জন্য একজন আদর্শ ব্যক্তিত্ব। একজন সঠিক মানুষকে যথাযথ মূল্যায়ন করার জন্য রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারকগণ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।