বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চট্টগ্রামের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি তার বক্তব্য রাখাকালীন শ্লোগান দিতে থাকা দলের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “এই বানরের দল, লাফালাফি ও শ্লোগান বন্ধ করো। শোক প্রস্তাব পাঠ করার সময় লাফালাফি করা অপরাধ।”
তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রথম পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন আজ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর)।
এ সময় তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের সম্মেলনের এ আয়োজন নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নই, এখানে অনেক কিছুর ঘাটতি রয়েছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের সম্মেলন।”
সম্মেলন স্থলে না তুলে দলীয় অফিসে জাতীয় ও দলীয় পতাকা তোলায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি দলের দুর্দিনে যারা দলকে টিকিয়ে রেখেছে তাদের খোঁজখবর নিয়ে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা এখন টাকাওয়ালা লোক দেখলে পাগল হয়ে যাই।”
দলের সকল ধরনের বিরোধ মীমাংসা করে দলকে সুসংগঠিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “দলের ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন ও শ্রদ্ধা-ভালোবাসা দিন, তাতে তারা সম্মানিত হবেন, দলের জন্য দেশের তাদের সকল ত্যাগকে সম্মান করুন, নিজেরাও সম্মানিত হবেন।”
আগামীতে যেকোনো দুঃসময়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে কর্মীদের সংগঠিত হওয়ার কথা বলেন তিনি।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান আজ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে বাঁশখালী সরকারি বালিকা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি, প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুরের সঞ্চালনায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শ্যামল কান্তি দাশ।
সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস, সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন মনসুর, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম, দপ্তর সম্পাদক মো. আবু জাফর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির লিটন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী, বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র এস.এম তোফাইল বিন হোছাইন।
সভায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি বলেন, “জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল করেছেন।”
তিনি বলেন, “আজ বাঁশখালীর সব নেতারা এক জায়গায় মিলিত হয়ে যে গণজাগরণ সৃষ্টি করেছে তা বজায় রাখতে হবে। ভোটের দিন যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের নয়, যারা সারাজীবন আওয়ামী লীগ করে তাদের মূল্যায়ন করুন। বাঁশখালীকে জামাত-শিবির মুক্ত করে এ আসন আওয়ামী লীগের এলাকা তা প্রমাণ করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণ মানুষের সংগঠন। সংগঠনের সকল ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে এগিয়ে নিতে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর আগমনের একদিন পর এ সম্মেলনের আয়োজন করতে গিয়ে অনেক ভুলত্রুটি হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমি এমপি না হলে কোনো সমস্যা নেই কিন্ত শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে দেশের ক্ষতি হবে।”
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় দেশের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছি, সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় বাঁশখালী হয়ে যাতে মেরিন ড্রাইভ কক্সবাজার যায় সেই ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”