আমি তোদের ছাড়া বাঁচতে চাই না

লাকির মায়ের আহাজারি

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

‘আমাকে মা বলে কে ডাকবে, সৌরভ বের হও, সায়ন্তী আস, আমি তোদের ছাড়া বাঁচতে চাই না। আস, আমাকে নিয়ে যাও।’ এক রাতে মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ পাঁচ স্বজনকে হারানো চিনু দে নামের এই বৃদ্ধা নারী এভাবেই আহাজারি করছিলেন। খোকনের শাশুড়ি এই বৃদ্ধা যখন সড়কের পাশে আহাজারি করছিলেন তখন অন্য পাশে পুলিশের গাড়ি থেকে নামানো হচ্ছিল সাদা কাপড়ে মোড়ানো পাঁচটি মৃতদেহ। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে। আগুনে মেয়ে ও নাতি-নাতনির মারা যাওয়ার খবর পেয়ে চট্টগ্রাম নগরের ঝাউতলা থেকে ভোরেই ছুটে এসেছিলেন চিনু দে। আহাজারি করতে করতে তিনি বলছিলেন, ‘লাকি’ বলে এখন কাকে ডাকবেন? কার বাড়িতে বেড়াতে আসবেন?

লাকির বড় বোন মনি দে ও ছোট বোন ঝর্ণা দেও খবর শুনে এসেছেন। কয়েক দিন পর একসঙ্গে রাঙামাটি বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল তিন বোনের। আহাজারি করতে করতে তারা বলছিলেন, এখন কাকে নিয়ে বেড়াতে যাবেন?

একসময় স্বজনদের আহাজারির মধ্যেই লাশগুলো নিয়ে রাখা হয় উত্তর পারুয়া সিবিএস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির মাঠে। যেখানে ছিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া খোকন বসাকের বাবা কাঙাল বসাক, মা ললিতা বসাক, স্ত্রী লাকি বসাক, ছেলে সৌরভ বসাক ও মেয়ে সায়ন্তী বসাকের নিথর দেহ। সেখানেও মৃতদেহগুলো ঘিরে স্বজনরা আহাজারি করছিলেন। তাদের আহাজারি দেখে পাড়া-প্রতিবেশীরা অনেকে চোখের জল মুছছিলেন।

খোকন বসাকের ছোট বোন রীণা দেব বলেন, ঘটনার আগে থেকেই তাদের দুই বোনের বাপের বাড়ি আসার কথা ছিল। শনিবার ছিল তার ভাতিজি সায়ন্তীর জন্মদিন। সেদিন সবাইকে দাওয়াত করেছিলেন তার বাবা-মা। কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেল!

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুয়েকটির বিচারকাজ শুরু বাকিগুলো হিমাগারে
পরবর্তী নিবন্ধতবলায় সৌরভ ছড়াত সৌরভ