বিগত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের দেড় দশকে ২৫ জেলায় আড়াই হাজারের বেশি গায়েবি মামলা চিহ্নিত করার তথ্য দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে বহু গায়েবি মামলা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এসব মামলা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়। তবে এই উদ্যোগ (গায়েবি মামলা প্রত্যাহার) নিতে দেরি হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২৫ জেলায় আড়াই হাজারের বেশি মামলাকে গায়েবি হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছি। এর বাইরেও অনেক থাকতে পারে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে এগুলো প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
উপদেষ্টা বলেন, আশা করছি, ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের কাজ সম্পন্ন করতে পারব। গায়েবি মামলা শনাক্তে কয়েকটি মানদণ্ড নির্ধারণের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যেমন মামলাগুলো পুলিশ দায়ের করেছে কিনা; বিস্ফোরক আইনে করা কিনা; অস্ত্র আইনে করা কিনা কিংবা পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে কিনা। গায়েবি মামলা প্রত্যাহারে এসব প্রবণতা আমরা নজরে রেখেছি। এসব মামলায় অনেক অজ্ঞাত আসামি থাকে। আমরা দেখেছি, মামলাগুলো হতো বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর বড় বড় আন্দোলনের আগে–পরে। তিনি বলেন, তিনটি ভুয়া নির্বাচনের আগে–পরেও হয়েছে। এসব ক্রাইটেরিয়ার ভিত্তিতে আমরা আড়াই হাজারেরও বেশি মামলা শনাক্ত করেছি। এগুলো প্রত্যাহার হবে আশা করছি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে দায়ের করা মামলা দ্রুত শেষ করা হবে। এজন্য দ্বিতীয় ট্রাইবুনাল গঠন করার কথাও জানান তিনি। আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই গণহত্যাকারীদের বিচারে কোনো শৈথিল্য দেখানো হবে না। শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে জোর দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদি ভারত হাসিনাকে ফেরত না দেয়, প্রয়োজনে আমরা আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে কথা বলব, তাদের সহযোগিতা চাইব।
বিয়ের ট্যাক্স প্রত্যাহার, কাবিননামায় কুমারী শব্দ থাকবে না : বিয়ের কাবিননামায় কুমারী শব্দ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা কিছু শব্দ নিয়ে অনেক আপত্তি শুনেছি। বিয়ের কাবিননামায় এখন থেকে শুধু অবিবাহিত শব্দ থাকবে। এছাড়া বিয়ের ক্ষেত্রে ট্যাক্স প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আসিফ নজরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এ গেজেট অনুযায়ী আপিল বিভাগ ও আটর্নি জেনারেলসহ ৬ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। দক্ষ ও যোগ্য লোকদের নিয়োগ বাছাই করার পর সাক্ষাৎকার নেবে কমিশন। নীতিমালার আলোকে যে কেউ আবেদন করতে পারবে।