রমজানের ঠিক আগে ভোক্তাদের স্বস্তি বয়ে এনেছে ভোগ্যপণ্যের বাজার। পাইকারিতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রমজানের ইফতারির অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছোলার দাম কমেছে মানভেদে ১০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া খেসারি ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, গরম মসলা এবং চিড়ার দাম নিম্নমুখী। এদিকে পাইকারিতে রমজানের কিছু অত্যাবশ্যকীয় উপাদানসহ ভোগ্যপণ্যের দাম কমের ধারায় থাকলেও খুচরাতে আদৌ এর প্রভাব পড়বে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোক্তারা।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানকে কেন্দ্র করে এ বছর বিপুল পরিমাণ ছোলা, চিড়া এবং ডাল জাতীয় পণ্য আমদানি হয়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে তেল-চিনির বাজার। গতকাল খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়ার ছোলার দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এছাড়া সাদা মটর ৩ টাকা কমে ৪২ টাকা, মশুর ডাল ১০ টাকা কমে ১১০ টাকা, চিড়া ৫ টাকা কমে ৪০ টাকা, এলাচ ৫০ টাকা কমে ১ হাজার ৭০০ টাকা, লবঙ্গ ২০ টাকা কমে ২ হাজার ৩০ টাকা, জিরা ২০ টাকা কমে ৩৪০ টাকা, দারুচিনি ১০ টাকা কমে ২৯৫ টাকা, পেঁয়াজ ৫ টাকা কমে ২৫ টাকা, চীনা রসুন ১০ টাকা কমে ৯৫ টাকা, চীনা আদা ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। অপরদিকে পাম তেলের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে মণপ্রতি ১০০ টাকা কমে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৫০ টাকায়। এছাড়া মণপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম ১৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৪০০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানান, রমজানকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর দেশের শীর্ষ ভোগ্যপণ্যের আমদানিকারকরা পণ্য আমদানি করেন। তবে এ বছর রমজানের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছোলা, চিড়া ও ডালজাতীয় পণ্য বেশি এসেছে। বিশেষ করে বাজার অস্ট্রেলিয়ার ছোলায় সয়লাব হয়ে গেছে। এছাড়া এখন আবার মিয়ানমার থেকেও ছোলা আসা শুরু হয়েছে। ফলে দামও নিম্নমুখী।
জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. এহসান উল্লাহ জাহেদী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভোগ্যপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার কিন্তু খুব একটা কমেনি। আন্তর্জাতিক বাজার না কমলেও আমাদের দেশের অভ্যন্তরে ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বাড়ার কারণে প্রায় সবধরনের পণ্যের দাম নিম্নমুখী। তেলের বাজারে আর সেই উত্তাপ নেই। এছাড়া ছোলা ও গরম মসলাজাতীয় পণ্যের দাম আরো কমে গেছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, আমাদের দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজারে পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। ভোগ্যপণ্যের বাজার পাইকারিতে নিম্নমুখী হলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়তে সময় লাগে। তাই পাইকারিতে দাম কমার সরাসরি সুফল সাধারণ ভোক্তারা পান না। কিন্তু দেখা যায়, কোনো পণ্য পাইকারিতে দাম বাড়লে খুচরা ব্যবসায়ীরা সাথে সাথে দাম বাড়িয়ে দেন। তাই প্রশাসনকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে। যাতে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী কারসাজির মাধ্যমে দাম বৃদ্ধি করে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে।











