দুর্যোগ সহনশীল মডেল ইউনিয়ন হচ্ছে মহেশখালীর কালারমারছড়া

মহেশখালী প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৩১ মার্চ, ২০২২ at ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দেশের জনগণের জানমাল রক্ষার্থে টেকসই উন্নয়ন ও দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠাম গড়ে তুলতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সারাদেশ থেকে প্রাথমিকভাবে ৫টি ইউনিয়নকে দুর্যোগ সহনশীল মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তোলার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
এই প্রকল্পের জন্য কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নকে বেছে নিয়েছে সরকার। গত ২ মার্চ দুর্যোগ সহনশীল মডেল ইউনিয়ন তৈরীর নীতিগত অনুমোদন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রণালয়। এরপর প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
এ ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) নিশ্চিন্ত কুমার পোদ্দার মুঠোফোনে বলেন ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রথমবারের মতো এটি পাইলট প্রকল্প। এ জন্য কালারমারছড়াসহ পাঁচটি ইউনিয়নকে মনোনীত করা হয়েছে। সরকারি সকল দপ্তরের চাহিদার ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। যার সম্পূর্ণ অর্থ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হবে।
কালামারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মতে, গত ২১ মার্চ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিপ্তরে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সামগ্রিক বিষয় নিয়ে মতামত গ্রহণ করে দ্রুত কাজ শুরু করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। এ জন্য একটি সভার আয়োজন করার নির্দেশনা পেয়েছি। উক্ত সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিপ্তরের মহাপরিচালক উপস্থিত থাকার সদয় সম্মতি জানিয়েছেন। আশা করছি খুব শীঘ্রই এটি বাস্তবায়ন হবে। এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইতোমধ্যে প্রাথমিক ধাপের কাজ শুরু করেছি। শীঘ্রই ইউনিয়নের সমস্ত মানুষের অংশগ্রহণে একটা সভা করব। সভায় স্থানীয় জনগণই বলবে, তাঁদের ঝুঁকিগুলো কী কী। সেই অনুপাতে আমরা ব্যবস্থা নেব।
মো. জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘প্রথমে ওয়ার্ড ভিত্তিক ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করা হবে। তিন মাসের মধ্যে প্রত্যেক জনগণের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি প্রত্যেক সরকারি দপ্তর জরিপ করবেন। স্থানীয় জনগণ তাদের চাহিদার কথা জানাতে পারবেন। সে মোতাবেক সেটির সমাধান করবেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে এ ক্ষেত্রে তথ্য নির্ভুল হতে হবে। সম্মিলিতভাবে এটির বাস্তবায়ন করবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
প্রকল্পে যা থাকছে : এ প্রকল্পের মাধ্যমে ভিটে উঁচুকরণ, প্রয়োজনীয় সংখ্যক রাস্তাঘাট নির্মাণ, রাস্তাঘাট এইচবিবি করণ, ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ, নতুন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, মুজিবকিল্লা নির্মাণ, আশ্রয়কেন্দ্রসমূহ সংস্কার, বজ্রপাত নিরোধক স্থাপন, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে প্রশিক্ষণ দেয়া, দুর্যোগের পূর্বাভাস সংক্রান্ত বিষয়ে সকল ইমাম, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, এনজিও জনপ্রতনিধিসহ সকল শ্রেণী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেয়া ইত্যাদি। সাগরের প্লাবন ঠেকাতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, খাল ও নদীর তীরের বাঁধ উঁচুকরণ, খাল খনন, নদীভাঙন ঠেকাতে সিসি ব্লক, জিওব্যাগ বসানো হবে। একই সাথে পুরো ইউনিয়নের দরিদ্র ও ভূমিহীনরা ডাটাবেজের আওতায় আসবে। যারা ভূমিহীন তারা বাড়ি পাবেন। শিক্ষার হার বাড়াতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়ানো হবে। যারা বেকার তাদের কাজ দেয়া হবে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এটা সফল হলে উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নগুলোকে পর্যায়ক্রমে এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাইকারিতে নিম্নমুখী ধারায় ভোগ্যপণ্যের বাজার
পরবর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে বসন্ত সাহিত্য আসর