নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার দুই বছর পরও খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের ছাত্রীনিবাস এখনো চালু হয়নি। ‘জনবল সংকটের কারণে’ ছাত্রীনিবাসটি চালু না হওয়ায় আবাসিক সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন দুর্গম এলাকার ছাত্রীরা। প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ছাত্রীনিবাসটি নির্মাণ করেছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০২০ সালে ছাত্রীনিবাসের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীর সাড়ে ৬ হাজার। জেলার ৯ উপজেলার পাশাপাশি রাঙামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ি থেকেও ছাত্রীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসেন। দুর্গম এলাকার ছাত্রীদের আবাসিক সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এই ছাত্রীনিবাস। দুই বছর আগে ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিটি কক্ষে শয্যা, টেবিলসহ আবাসপত্র রাখা হলেও সেখানে থাকছেন না কোনো শিক্ষার্থী। ছাত্রীনিবাস চালু না হওয়ায় শহরে বাড়তি ভাড়ায় মেসে থাকতে হচ্ছে তাদের। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনেক শিক্ষার্থী।
কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইসরাত জান্নাত উর্মি ও সুলতানা মুন্নী জানান, আমাদের কলেজের ছাত্রীনিবাসটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে আরো আগে। কিন্ত এখনো আমরা সেখানে থাকতে পারছি না।
শহরের মেসে ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। অনেক অসুবিধা হচ্ছে। অনেক খরচ হচ্ছে। অনেকে দূর দূরান্ত থেকে এসে লেখাপড়া করছে। ছাত্রীনিবাস চালু হলে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে পড়াশোনা করতে পারতাম।
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিনা ত্রিপুরার বাড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায়। জেলা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় শহরের ভাড়া মেসে থেকে পড়াশোনা করছেন। তিনি বলেন, আমাদের হোস্টেল চালু হবে বলে আমরা অলরেডি ফরমও নিয়েছি। কলেজ থেকে অনুমতি না পাওয়ায় এখনো হোস্টেলে উঠতে পারিনি। এখন ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। পরিবারের তেমন সার্মথ্যও নেই। ভাড়া বাসায় থাকায় আমাদের আর্থিকভাবে সমস্যা হচ্ছে।
সরকারিভাবে বরাদ্দ না পেলেও জরুরি ভিত্তিতে ছাত্রীনিবাসটি চালু করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বা জেলা পরিষদ থেকে এককালীন সহযোগিতা চেয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক জাকির হোসেন জানান, আমাদের এখানে অনেক উন্নয়ন সংস্থা রয়েছে, তারা যদি এককালীন অন্তত ১০ লাখ টাকা সহায়তা দেন তাহলে ছাত্রীনিবাসটি চালু করা সম্ভব। পরবর্তীতে অভ্যন্তরীণ আয় থেকে এটি পরিচালনা করা যাবে।
ছাত্রীনিবাসটি চালু করার জন্য মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানান, কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মিছাবাহুদ্দীন আহমদ। তিনি জানান, জনবল সংকটের কারণে ছাত্রীনিবাসটি চালু করতে পারছি না। আমাদের কলেজে ১২ কর্মচারী আছেন। এর মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৩ জন। কলেজেরও সার্মথ্য নেই যে নিজস্ব অর্থায়নে জনবল নিয়োগ করা।