চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ উপজেলা ফটিকছড়ির সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন ২নং দাঁতমারা। যেখানে প্রায় ৪৫ হাজার ভোটার হলেও ১ লাখের উপরে মানুষের বসবাস। তবে ওই ইউপির গজারিয়া খালের উপরের ১টি কাঠের এবং ২টি জরাজীর্ণ ব্রিজের জন্য চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কয়েক গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষকে। এতে যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, নারী, বয়োবৃদ্ধ, যানবাহন, পথচারী ও স্থানীয় এলাকাবাসীদের।
সরেজমিন দাঁতমারা ইউপির বটতলী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গাছের কিছু কাঠ দিয়ে বানানো এ ব্রিজটি এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, ছোট কোন যানবাহন গেলে মানুষ চলাচল করে না, মানুষ গেলে গাড়ি চলে না, কারণ অতিরিক্ত বোঝাই হলে ভেঙে পড়তে পারে ব্রিজটি। দাঁতমারা ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের বড় বেতুয়া, ছোট বেতুয়া, পেলারখিলসহ কয়েক গ্রামের মানুষ এ ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করে। ১৫–২০ হাজার মানুষের একমাত্র যাতায়াত এ ব্রিজ দিয়ে হলেও কোন ধরনের ভারি কিংবা বড় যানবাহন চলাচল করতে পারে না। একই ইউপির শান্তিরহাট বাজারের পশ্চিমে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়– ৭নং বড়ইতলী, রত্নপুর সড়কের গজারিয়া খালের ওপর নির্মিত সেতুটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতুর দুই পাশে নেই কোনো রেলিং। সব পিলারের পলেস্তারা ওঠে গেছে। বেরিয়ে গেছে রড। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে হাজারো মানুষ ও যানবাহন। যে কোনো সময় সেতুটি ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। একইভাবে কালিকুম্ভ এলাকার ব্রিজটা মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। হাসনাবাদ, পূর্ব হাসনাবাদ, পশ্চিম হাসনাবাদ, ঘরকাটা, পেলারখিল গ্রামের মানুষের যাতায়াত এ ব্রিজ দিয়ে। এ দুটি ব্রিজ দিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের যাতায়াত করে। বটতলী, কালিকুম্ভ এবং শান্তিরহাটের এ ৩টি ব্রিজ দিয়ে দাঁতমারার অর্ধেক মানুষের যাতায়াত। ফলে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ব্রিজ গুলোর উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এলাকাবাসী এ ব্রিজগুলো নির্মাণের দাবি জানায়।
এ ব্যাপারে দাঁতমারা ইউপি চেয়ারম্যান মো. জানে আলম বলেন, পুরো ফটিকছড়ির মধ্যে আমার ইউনিয়নটি আয়তন এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে বড়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের মধ্যে থেকে বঞ্চিত আমার ইউপির অর্ধলক্ষ মানুষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ তিনটি ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, দ্রুত এ ব্রিজ গুলো নির্মাণ করা হোক।
উপজেলা এলজিইডির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দাঁতমারার ৩টি ব্রিজ ঝুকিপূর্ণ এবং ব্যবহার অনুপযোগী। কাঠের ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। এছাড়াও বাকি ২টা ব্রিজও ব্যবহার অনুপযোগী। এগুলো কখন যে করা হয়েছিল তা নির্দিষ্ট করে জানাও নেই। কাঠের ব্রিজটির জন্য প্রস্তাব ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব পাশ হলেই ব্রিজটির কাজ শুরু হবে। এছাড়া বাকি ২টা ব্রিজের তথ্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এসব ব্রিজ অনুমোদন হয়ে আসলে কাজ শুরু করা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন– সংশ্লিষ্ট ব্রিজের সংযোগ সড়ক গুলো এলজিইডি অফিস করলে ব্রিজগুলো এখনো করা হয়নি, সেগুলোও আমরা করবো। ব্রিজ গুলোর তথ্য এবং প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, অনুমোদন হয়ে আসলে কাজ শুরু করা হবে। এ ৩টি ব্রিজ বর্তমানে ঝুকিপূর্ণ এবং ব্যবহার অনুপযোগী।