হারাতে না পারার চক্রে বন্দি জব্বারের বলী খেলা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

স্যাটেলাইট চ্যানেলের কল্যাণে রেসলিং এখন বেশ জনপ্রিয় এদেশে। কিন্তু রেসলিংয়ে কে কাকে কীভাবে পরাজিত করে সেটা বুঝা বড় মুশকিল। কারণ একজন মারছে তো মারছে, আর অন্যজন মার খাচ্ছে তো খাচ্ছে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্য জব্বারের বলী খেলার অবস্থাও এখন ঠিক তেমন। গত দশ বছরের বেশি আসরের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে ফাইনালে কেউ কাউকে হারাতে পারেনি। কখনো যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন আবার কখনো পয়েন্টে ভিত্তিতে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।

আবার সে পয়েন্টে কোনো ব্যাখ্যা নেই। কীভাবে একজন বলী পয়েন্ট অর্জন করবে সেটাও জানে না কেউই। বিচারকরা বলে দিলেন অমুক দুই পয়েন্ট পেয়েছে আর তমুক তিন পয়েন্ট পেয়েছে। বলী খেলায় পয়েন্টের সিস্টেমটা কী সেটাও বিচারকরা জানে কিনা সন্দেহ। কারণ পয়েন্টের যে কোনো ব্যাখ্যা নেই তাদের কাছে।

এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র থাকাকালে বেশ কয়েকবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল উখিয়ার দিদার বলী এবং খাগড়াছড়ির মর্ম সিং ত্রিপুরা বলী। পরে দুজনকে প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কার করা। এরপর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দিদার বলী ফিরলেও বলী খেলার ফাইনালের ফলাফলের কোনো পরিবর্তন আসেনি। পরে দিদার বলী অবসর নিয়ে নেন।

নতুন করে জব্বারের বলী খেলায় আবির্ভুত হয় চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম জীবন এবং কুমিল্লার শাহজালাল। ২০১৮ সালে এ দুজন ফাইনালে মুখোমুখি হয়। কিন্তু দীর্ঘ লড়াইয়ের পরও কেউ কাউকে হারাতে পারেননি। ফলে খেলায় শাহজালালকে বহিষ্কার করে জীবনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ২০১৯ সালের আসরে আবার ফাইনালে শাহজালাল আর জীবন বলী। এবারে শিরোপাধারীর নামে পরিবর্তন এলেও খেলার ফলাফলে কোনো পরিবর্তন আসেনি। পয়েন্ট লাভের কথা বলে সে আসরে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় কুমিল্লার শাহজালালকে।

করোনার কারণে দুই বছর খেলা হয়নি। দুই বছর বিরতি দিয়ে নতুন মঞ্চে আবার জব্বারের বলী খেলা। মঞ্চ নতুন হলেও মঞ্চের দুই কুশিলব সেই পুরানো শাহজালাল আর জীবন। এবারেও নাটকের কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্রায় ত্রিশ মিনিট লড়াই করেও কেউ কাউকে হারাতে পারেননি। ফলে আবারো সেই পয়েন্টের দোহাই দিয়ে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় তারেকুল আসলাম জীবনকে। গতকালও এই দুই বলীর মধ্যে কেউ কাউকে হারানোর কোনো প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়নি। কেবলই সময় ক্ষেপণ করার একটা মানসিকতা দেখা গেছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো দিদার বলী এবং মর্ম সিং ত্রিপুররা মত শাহজালাল এবং জীবনকেও বহিষ্কার করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেসরকারি ল্যাবের টেস্ট বাণিজ্য
পরবর্তী নিবন্ধমোবাইল ফোনে আর্থিক লেনদেন সীমায় যেসব বদল এল