ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দৈনিক প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলাটি করা হয়েছে রোববার রাতে ঢাকার তেজগাঁও থানায়। প্রথম আলোর করা এই মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে। এদিকে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মামলা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটির অপারেশনস কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তেজগাঁও থানায় মামলা করেন বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানিয়েছেন। মামলাটিতে অজ্ঞাত ৩৫০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগে পত্রিকাটির ৪০ কোটি টাকার ক্ষতির কথা বলা হয়েছে মামলার অভিযোগে। খবর বিডিনিউজের।
পুলিশ বলছে, প্রথম আলোর করা মামলায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সময় কেবল লুটপাট করা সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা; আর সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এদিকে, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসে অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যে ডিএমপি ভিডিও ফুটেজ দেখে এই দুষ্কৃতকারীদেরকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে এবং আমরা গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘হামলার ভিডিও বিশ্লেষণ করে এখন পর্যন্ত ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।’
গ্রেপ্তারদের রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা আমি খুঁজতে চাচ্ছি না, এরা দুষ্কৃতকারী। তারা আইন ভঙ্গ করছে। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রচলিত যে আইন, যে বিচার ব্যবস্থা, সে বিচার ব্যবস্থায় তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। সে যে দলেরই হোক, যে মতেরই হোক।’
লুটের টাকায় কেনা হয় টিভি–ফ্রিজ : প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার সময় ‘লুট করা অর্থ দিয়ে’ মামলার এক আসামি টেলিভিশন ও রেফ্রিজারেটর কিনেছেন বলে আদালতে দাবি করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে নাইম ইসলাম নামের ওই আসামি এবং তার আইনজীবী এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার আগেই পণ্য দুটি কেনা হয়েছিল।
প্রথম আলো মামলাকরার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃতদের গতকাল সোমবার আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার পরিদর্শক আবদুল হান্নান। আবেদনে নাইমের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘তার কাছ থেকে লুট করা নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং লুণ্ঠিত অর্থ দিয়ে কেনা একটি ফ্রিজ ও একটি টেলিভিশন জব্দ করা হয়েছে।’ মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
এজলাস কক্ষ থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে নাইমের কাছে টিভি–ফ্রিজের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আগেই টিভি–ফ্রিজ কিনেছি।’












