স্বপ্নের পদ্মা সেতু

সুমি দাশ | শনিবার , ২৫ জুন, ২০২২ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

বহুল প্রতীক্ষিত প্রায় ১৮ কোটি মানুষের স্বপ্নের বাস্তবায়ন এই পদ্মা সেতু। আর এই পদ্মা সেতুকে ঘিরে ছিল নানান ষড়যন্ত্র, বাঁধা বিপত্তি। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পারেন কেবল অসম্ভবকে সম্ভব করতে। তাঁর অসীম সাহসিকতা, আত্মপ্রত্যয় এবং এদেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা তার রক্তের সাথে মিশে আছে। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তর করার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা পূরণ করতে এক প্রকার মরিয়া তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বিশ্বের অন্যতম উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশও একটি। দেশ দারিদ্র্যকে জয় করেছে। মাথা পিছু গড় আয় বেড়েছে। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু হলো। আবারও একটি বৃহৎ পরিকল্পনা নিলেন পদ্মা নদীর উপর সেতু নির্মাণের। প্রকল্পটি তিনটি জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করবে – মুন্সিগঞ্জ ( মাওয়া পয়েন্ট / উওর পাড়) শরীয়তপুর এবং মাদারীপুর (জঞ্জিরা/ দক্ষিণ পাড়)। পদ্মা সেতু নিয়ে দুষ্কৃতকারীদের গুজবের শেষ ছিল না। অনেক বাঁধা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ পদ্মা সেতু এখন বাংলাদেশের মানচিত্রে।

এই সেতুটি অপেক্ষাকৃত অনুন্নত অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। বাংলাদেশের মোট এলাকায় ২৯% অঞ্চল জুড়ে ৩ কোটিরও অধিক জনগণ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে। দক্ষিণ বাংলায় নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। গড়ে উঠবে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র। যেখানে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটবে। এতে বেকার সমস্যা সমাধান হয়ে মানুষের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে। দক্ষিণাঞ্চলে বাড়বে দেশি বিদেশি বিনিয়োগ। এছাড়া প্রকল্পটি দেশের পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সেতুটিতে রেল, গ্যাস, বৈদ্যুতিক লাইন এবং ফাইবার অপটিক কেবল সমপ্রসারণের ব্যবস্থা রয়েছে। সেতুটির ফলে জিডিপি ১.২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা।

একসময় বাইরের দেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশ মানে দুর্ভিক্ষের দেশ, বাংলাদেশ মানে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের দেশ। এখন সারা বিশ্ব বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে এই দেশের উন্নয়ন দেখে। জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই একটি কথাই বলেন, বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন ও গরীব থাকবে না। তিনি হাজার হাজার গৃহহীন পরিবারকে ঘরবাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। গত ১০ বছরে এদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। জনগণ উন্নয়নের সুফল উপভোগ করছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। সকল আলোচনা, সমালোচনা ষড়যন্ত্র রুখে পদ্মার বুকে এখন দৃশ্যমান প্রায় ১৮ কোটি মানুষের স্বপ্ন ‘পদ্মা সেতুটি’। পদ্মা সেতু এখন আবেগ উচ্ছ্বাসের নাম। এটি সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক এবং অপমানের প্রতিশোধ। এই পদ্মা সেতু সারা বিশ্বে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমাদের অহংকার ও সাহসের আরেক নাম
পরবর্তী নিবন্ধহল্যান্ড থেকে