স্বপ্ন ডানা মেলার অপেক্ষায়

চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর

| বৃহস্পতিবার , ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সফল উদ্যোক্তা তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা এবং ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবোরেশনকে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অধিকতর ভূমিকা রাখার নিমিত্তে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সর্বপ্রথম চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) নির্মিত হচ্ছে ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’। আইসিটি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এটি নির্মিত হচ্ছে। খবর বাসসের।
চুয়েট সূত্র জানায়, প্রায় ১২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ একর জায়গাজুড়ে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়ে এখন উদ্বোধনের প্রহর গুণছে। এটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় এটি নতুন মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। বলা হয়, ইনকিউবেটরে ১ ডলার বিনিয়োগ করলে ৩০ ডলার আয় করা যায়। সেই হিসেবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে চুয়েটের এই শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্প। ুডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য সফলভাবে অর্জনের জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তোলা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশীয় সক্ষমতা যুগোপযোগী করা ও উদ্যোক্তা তৈরির প্রয়োজনীয়তা ছিল অপরিহার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হচ্ছে একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গবেষণা উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা। এই গুরুত্ব বিবেচনা করে, আইসিটি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রাথমিকভাবে চুয়েটে ইনকিউবেটর স্থাপনে আইসিটি বিভাগ প্রস্তাব করে ২০১২ সনে। আইসিটি ডিভিশন থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চুয়েট প্রশাসন প্রস্তাবটি গ্রহণ করে এবং চুয়েট ক্যাম্পাসে প্রকল্পের অনুকূলে প্রায় ৪.৭ একর জমি বরাদ্দ করে। তৎকালীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রেক্ষাপটে এটি ছিল একটি বৈপ্লবিক উদ্যোগ। প্রাথমিকভাবে, এটি ‘চুয়েট আইটি বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার’ নামে নামকরণ করা হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় উদ্যোগটি ২০১৫ সালের দিকে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আইসিটি বিভাগের বাজেট মনিটরিং কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রায় ২ বছর পরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ২৬ তম সভায় ২০১৭ সনের ৬ জুন একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের অনুমোদন দেন। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সনের জুনের মধ্যে ‘চুয়েট আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন’ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুরুর দিকে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮২ দশমিক ২ কোটি টাকা। পরবর্তী ধাপে সেই ব্যয় ৯৪ দশমিক ২৫ কোটি থেকে ১১৭ দশমিক ৭০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। বর্তমানে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে প্রায় ১২৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দীর্ঘদিন যাবত নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় সর্বশেষ ২০২২ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার জন্য নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও আগামী মার্চ মাসে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করে উদ্বোধন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্পের আওতায় ৫ একর জমির ওপর ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১০ তলাবিশিষ্ট একটি ইনকিউবেশন ভবন এবং ৩৬ হাজার বর্গফুটের ৬ তলাবিশিষ্ট একটি মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন তৈরি হচ্ছে। ইনকিউবেশন ভবনের মধ্যে থাকছে : স্টার্টআপ জোন, আইডিয়া/ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেইনস্টর্মিং জোন, এঙিবিশন সেন্টার, ই-লাইব্রেরি জোন, ডাটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, ভিডিও কনফারেন্সিং কক্ষ, সভাকক্ষ প্রভৃতি। এছাড়া ব্যাংক ও আইটি ফার্মের জন্য পৃথক কর্নার, অত্যাধুনিক সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, মেকার স্পেস, ডিসপ্লে জোন, প্রেস/মিডিয়া কাভারেজ জোন প্রভৃতি থাকবে। অন্যদিকে মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন সুসজ্জিত অডিটোরিয়াম এবং ৫০ জনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক চারটি কম্পিউটার ল্যাব কাম সেমিনার কক্ষ থাকছে। পাশাপাশি প্রতিটি ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ৪ তলাবিশিষ্ট পৃথক দুটি (একটি নারী, একটি পুরুষ) আবাসিক ডরমিটরি ভবন নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটি ডরমিটরিতে ৪০ টি কক্ষ রয়েছে। এছাড়া একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাব-স্টেশন ও সোলার প্যানেল স্থাপন করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআলীকদমে ঘুমের মধ্যেই পুড়ে অঙ্গার দুই ম্রো যুবক
পরবর্তী নিবন্ধবড় আইনজীবী হয়েও নুরুচ্ছফা তালুকদারের অহমিকা ছিল না