শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের চলমান পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকালে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের জানান। সাত সরকারি কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, সাত কলেজের চলমান পরীক্ষাগুলো অব্যাহত থাকবে। গতকাল এবং আজকের পরীক্ষাগুলোর তারিখ ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে শর্ত দেওয়া হয়েছে, পরীক্ষা চলাকালে কলেজগুলোর হোস্টেল খোলা যাবে না এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সাত কলেজের অধিভুক্ত অধ্যক্ষ মহোদয়গণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যসহ আমাদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সেখানে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি যে, এই সাত কলেজের চলমান এবং ঘোষিত পরীক্ষাগুলো পরীক্ষার্থীরা হোস্টেলে না ওঠার শর্তে চলমান থাকবে। আমি আশা করি, এই সাত কলেজের কোনো পরীক্ষা নিয়ে কোনো সংশয় থাকবে না, পরীক্ষাগুলো চলবে। কিন্তু আমাদের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ২৪ মে খুলবে আর হলগুলো খুলবে ১৭ মে। তার আগে সকল প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয় করবে। সেক্ষেত্রে যেখানে যে সহযোগিতা লাগবে, সে সহযোগিতা আমরা দেব।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও অধ্যক্ষদের এক সভায় সাত কলেজের সব পরীক্ষা ২৪ মে পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছিল। ওই সিদ্ধান্তের পর তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং হল-ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। রাতে তারা ফিরে গেলেও গতকাল বেলা ১১টার দিকে আবার তারা নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুরে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করলে শাহবাগ পর্যন্ত সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় নগরীর বড় অংশজুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এদিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দুপুরে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য এবং সাত কলেজের অধ্যক্ষরা ওই ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন।
বিকাল পৌনে ৪টার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা এলে সড়কে অবস্থান নিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। আনন্দ প্রকাশ করে স্লোগান দিতে দিতে তারা ফিরে গেলে বিকাল ৪টার পর থেকে সড়ক আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করে।