উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার সোমবার থেকে সারাদেশে যে ‘কঠোর লকডাউন’ জারির ঘোষণা দিয়েছে। ২৮ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত ৭ দিন এ লকডাউন চলবে। এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সকল সরকারি বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকৎসা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত যানবাহন এবং গণমাধ্যম নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। আজ শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বিধিনিষেধের বিষয়ে বিস্তারিত আদেশ জারি করা হবে বলে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার গতরাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন। এদিকে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ ও বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। গত রাতে তিনি বলেন, ‘সোমবার থেকে ৭ দিন এ কঠোর লকডাউন চলবে। এরপর প্রয়োজন মনে করলে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরো বৃদ্ধি করা হবে।’ এবারের লকডাউনের মধ্যে জরুরি কারণ ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ যাতে বিধিনিষেধ মানে, সেজন্য কাজ করবে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী।’ বিধিনিষেধের মধ্যে সকল সরকারি ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকলেও বাজেটের কাজে সহযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংক শাখা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ কয়েকটি অফিস আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর গত এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকেই সারাদেশে ধাপে ধাপে মেয়াদ বাড়িয়ে লকডাউনের বিধিনিষেধ চালু রাখা হয়েছে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শিথিল করা হয়েছে বেশ কিছু নিয়ম। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় জুনের শুরু থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে বাড়তে উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। সংক্রমণ ধরা পড়েছে আরও ৫ হাজার ৮৬৯ জনের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশে একটানা ১৪ দিন ‘সম্পূর্ণ শাটডাউন’ ঘোষণার সুপারিশ করে কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটি। জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয় তাদের সুপারিশে। সরকার ওই সুপারিশ সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় নেবে জানিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘সংক্রমণ কমানোর জন্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে যেটা প্রয়োজন সেটাই করা হবে।’