সৈয়দ আলী আহসান। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, জাতীয় অধ্যাপক, সব্যসাচী লেখক। তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক, সম্পাদক ও অনুবাদক। আলাওলের পদ্মাবতী (বাংলা একাডেমি নিয়োজিত সংগ্রাহক আব্দুস সাত্তার চৌধুরী সংগৃহীত পূর্ণাঙ্গ কপি) সম্পাদনা করে তিনি বাংলা সাহিত্যে স্মরণীয় হয়ে আছেন। সৈয়দ আলী আহসানকৃত বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের ইংরেজি অনুবাদ সরকারি ভাষান্তর হিসাবে স্বীকৃত। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মার্চ মাগুরা জেলার আলোকদিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে ১৯৪৩ সালে স্নাতক এবং ১৯৪৪ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে তিনি কলকাতা চলে যান। অত:পর যথাক্রমে অল ইন্ডিয়া রেডিও কলকাতা কেন্দ্রে এবং রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রে কর্মসূচি নিয়ামকরূপে চাকরি করেন। তিনি ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ আলী আহসান করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান নিযুক্ত হন। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলা একাডেমির পরিচালক (প্রধান নির্বাহী) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ২৮ ফেব্্রুয়ারি থেকে ৭৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সুইডেনের নোবেল কমিটির সাহিত্য শাখার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি জাতীয় অধ্যাপক হিসাবে অভিষিক্ত হন এবং সে বছরই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান জীবৎকালে বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮৩ সালে একুশে পদক এবং ১৯৮৭ সালে স্বাধীনতা পদক লাভ করেন। ২০০২ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।