শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের (ওয়ার্কার্স প্রভিডেন্ট ফান্ড- ডব্লিউপিএফ) ৫০ কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠায় সিবিএ নেতা মোহাম্মদ এয়াকুবের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। বিপিসি সচিব (সরকারের উপ-সচিব) মো. লাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সিবিএ নেতা মো. এয়াকুবের রিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিপিসিকে অবহিত করতে যমুনা অয়েল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশনা দেয়া হয়। গত ১৭ জুন চিঠিটি স্বাক্ষরিত হলেও যমুনা অয়েল কোম্পানিতে গিয়েছে গত সপ্তাহের দিকে।
বিপিসির সচিব স্বাক্ষরিত পত্রে সংযুক্ত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ডব্লিউপিএফ ৫ শতাংশের জমাকৃত টাকার কোন হিসাব নেই। ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের নিরীক্ষিত হিসাব দেয়া হলেও এরপরের কোন হিসাব দেয়া হয়নি। শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের ৫ শতাংশের শ্রমিকদের জমাকৃত টাকা বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর রেখে লিখিতভাবে কমসুদে রেখে অলিখিতভাবে বাকি সুদের টাকা দুজনে (কোম্পানির কর্মকর্তা মাসুদুল ইসলাম ও সিবিএ নেতা মো. এয়াকুব) ভাগ নিলেও কেউ মুখ খোলার সাহস করে না। ৫০ কোটি টাকা ফান্ডের ওপর ভিত্তি করে সিবিএ নেতা মো. এয়াকুব তার আত্মীয় স্বজনকে বিভিন্ন ব্যাংকে চাকরি দেয়। নিজের ভাগিনাকেও ব্যাংকে চাকরি দেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. এয়াকুব গতকাল রাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘অভিযোগটি ভিত্তিহীন, বেনামী অভিযোগ। শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের বিষয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটিতে আমার স্বাক্ষর ক্ষমতাও নেই। মাসুদুল ইসলাম নামের যে কর্মকর্তার নাম বলা হয়েছে, তিনিও অনেক বছর ধরে ওই কমিটিতেই নেই। মূলত শ্রমিকদের দাবি দাওয়া নিয়ে কথা বলার কারণে বিপিসির দুই কর্মকর্তা রুষ্ট হন। যে অভিযোগটি করা হয়েছে, সেটিতে কারো স্বাক্ষরও নেই। যিনি (বিপিসির সচিব) চিঠি দিয়েছেন, তাকে চেয়ারম্যান মহোদয় তিরস্কারও করেছেন। এজন্য চেয়ারম্যানের (বিপিসির চেয়ারম্যান) সামনে সচিবের সাথে আমার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। অভিযোগটি আমলে নেয়ারও বিষয় নয়।’ তিনি বলেন, ‘শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের অনেকদিন অডিট হয়নি। আমি নিজেও কমিটিতে বলেছি হিসেব হালনাগাদ করে রাখার জন্য। এখন অডিট চলছে। যে ৫০ কোটি টাকার কথা বলা হয়েছে। তহবিলে আরও বেশি টাকা জমা রয়েছে।’
এ বিষয়ে বিপিসির সচিব মো. লাল হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘যমুনা অয়েলের সিবিএ নেতা মো. এয়াকুবসহ আরেকজন অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। যমুনাকে দেয়া চিঠির হেডলাইনে অফিসারের নামটা বাদ গিয়েছিল। ওর (মো. এয়াকুব) বক্তব্য ছিল অভিযোগ দুইজনের নাম হলেও একজনের নামে চিঠি কেন? এখন চিঠির হেডিংয়ে দুইজনের নাম উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।’