সাড়ে ২৩ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার সার্ভেয়ার আতিক জেল হাজতে

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ৩ জুলাই, ২০২২ at ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

সাড়ে ২৩ লাখ টাকা নিয়ে বিমানবন্দরে ধরা পড়া কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানকে আদালতের নির্দেশে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ। শুক্রবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার বিমান বন্দর থেকে একটি ফ্লাইটে করে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণের পর তিনি এয়ারপোর্ট পুলিশের হাতে এত বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে ধরা পড়েন। তাকে আরেক বিমানে করে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হলে কক্সবাজার বিমান বন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৯ টার দিকে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান কক্সবাজার বিমান বন্দরে প্রবেশ করেন। এ সময় স্ক্যানে ব্যাগভর্তি টাকা থাকার বিষয়টি নজরে আসে গোয়েন্দা সংস্থার। তারা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানায়। এর মধ্যে পৌনে ১০টায় তাকে বহন করা বিমানটি কক্সবাজার ছেড়ে যায়। ঘণ্টাখানেক পর বিমানটি ঢাকা বিমান বন্দরে পৌঁছালে তার লাগেজ তল্লাশি করে ব্যাগভর্তি টাকা পাওয়া যায়। তখন বিমান বন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা আতিকুরের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে অপর একটি ফ্লাইটে তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠান। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, তার হাতে যে টাকা পাওয়া গেছে তার বৈধ কোনো উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে তাকে কঙবাজার সদর থানায় সোপর্দ করা হয়।
কঙবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) লিখিত অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে লিপিবদ্ধ করে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তার কাছ থেকে ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধার হয়েছে। এ টাকাগুলো জব্দ করা হয়েছে। বিধি মোতাবেক ঘটনাটি তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মিরপুর এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে। তিনি মহেশখালীতে সরকারের প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন। বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এই সার্ভেয়ার প্রায় এক বছর আগে সংযুক্তিতে কঙবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় যোগ দেন।
এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে র‌্যাব কঙবাজার শহরের তারাবনিয়ার ছড়া এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ওয়াসিম খানকে ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকাসহ গ্রেপ্তার করেছিল। একইদিন ওই এলাকায় সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ফেরদৌসের বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৭ লাখ টাকা এবং শহরের বাহারছড়া এলাকায় সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ফরিদের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৬১ লাখ ২০ হাজার টাকা জব্দ করেছিল।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিনটি তদন্তে কঙবাজারের ভূমি অধিগ্রহণে মোট ৭৮ কোটি টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। পরে তাকে প্রথমে বদলি এবং গত ফেব্রুয়ারি মাসে চাকরিচ্যুত করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅসুস্থ ছিলাম, দলের কেউ খোঁজ নেয়নি : রওশন
পরবর্তী নিবন্ধভেঙে পড়া মাচা চাপায় ভবন মালিকের মৃত্যু