শেয়ার বাজার থেকে কারসাজির মাধ্যমে অর্থ লোপাটের অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এবং মাগুরা–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। সাকিব এবং অন্য আসামিরা মিলে শেয়ার কারসাজি করে ২৫৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
ক্রিকেট তারকা সাকিব এক সময় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসইসি এবং দুদকের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর ছিলেন। এখন পুঁজিবাজারের কেলেঙ্কারিতে সেই দুদকের মামলাতেই তাকে আসামি হতে হল। শেয়ার কারসাজির অভিযোগে গতবছর সেপ্টেম্বরে সাকিব আল হাসানকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি। খবর বিডিনিউজের।
দুদকের মামলার বাকি ১৪ আসামি হলেন– সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজি ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমাছুন কবির ও তানভির নিজাম।
দুদক বলছে, এ মামলার আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সম্পর্কিত প্রচলিত আইন ও বিধান যেমন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ১৭ ধারা লঙ্ঘন করেছেন বলে তারা প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখতে পেয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টসমূহে অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফটকা ব্যবসার মত ধারাবাহিক লেনদেন, প্রতারণামূলক সক্রিয় লেনদেন, ফাটকা ও অনুমাননির্ভর লেনদেনের মাধ্যমে বাজারে কারসাজি করত। তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র গঠন করে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারে ধারাবাহিকভাবে ক্রয়–বিক্রয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে দাম বৃদ্ধি করে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেই শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করত। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির শিকার হন এবং চক্রটি ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকারও বেশি আত্মসাৎ করে, যা অস্বাভাবিক মূলধন লাভ হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে ছিল অপরাধলব্ধ অর্থ।