মহামারীর এই সময়ে স্বাস্থ্যখাতে ‘অব্যবস্থাপনার’ অভিযোগে সংসদে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়লেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দাবি করেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ ‘খুবই সফলতা’ দেখিয়েছে। জাতীয় সংসদে সম্পূরক বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা গতকাল সোমবার মন্ত্রীর সমালোচনা করেন। এসময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মঞ্জুরি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী সংসদ সদস্যরা বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাব করেন। এক পর্যায়ে তারা করোনাভাইরাসের টিকা, ‘দুর্নীতি ও অনিয়মের’ প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, কেনাকাটায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো। কিভাবে এই মন্ত্রণালয়ের সংস্কার করবেন, তা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সুস্পষ্টভাবে জানাতে হবে। স্বাস্থ্য খাত নিয়ে কথা বলতে বলতে বেহাল হয়ে গেছি। স্বাস্থ্য বিভাগকে সংস্কারের আওতায় আনতে হবে। বেহাল দশা থেকে রক্ষা করতে কমিটি গঠন করতে হবে।
করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে ভারত কেন ‘চুক্তির বরখেলাপ করল’ এই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, কবে করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু হবে সেটা স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। প্রয়োজনে টিকা আনা উন্মুক্ত করে দিতে হবে।
বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, ১০ মাসে স্বাস্থ্যখাতে বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা- এডিপির মাত্র ২৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এখন আবার নতুন বরাদ্দ চাইছে। কেন ৭৫ শতাংশ অব্যবহৃত রয়ে গেছে তার জবাব স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দিতে হবে।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আপনি একজন সজ্জন ব্যক্তি। আপনার বাবা আমার সাথে মন্ত্রী ছিলেন। আপনাকে আমি চিনি। অত্যন্ত ধনাঢ্য পরিবারের ছেলে আপনি। কিন্তু আপনারতো কর্তৃত্বনেই, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যা হচ্ছে! হাসপাতালে অঙিজেন নেই। এখন দরকার অঙিজেন। সেটা না এনে আনা হচ্ছে এমআরআই, সিটিস্ক্যান মেশিন। পাঠানো হচ্ছে উপজেলায়। তারা সব সাজিয়ে রেখে দিয়েছে। চালাতে পারে না।
তবে সংসদ সদস্যদের সমালোচনার মুখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ওষুধের কোনো ঘাটতি হয়নি। অঙিজেনের অভাব কখনোই হয়নি। আমেরিকায় যে চিকিৎসা এখানেও একই চিকিৎসা হয়েছে। টিকাদান কার্যক্রম চলমান আছে এবং আরও টিকা কিনতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব কারণে মৃত্যুর হার দেড় শতাংশ। পৃথিবীতে এই হার আড়াই শতাংশ।
মহামারীতে সরকারির হাসপাতালে প্রতিটি ব্যক্তির জন্য সাধারণ শয্যায় চিকিৎসা নিতে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। যারা আইসিইউতে ছিল তাদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে সরকারের পক্ষ থেকে খরচ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ ‘খুবই সফলতা দেখিয়েছে’ দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ কারণে জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক আছে।