উপজেলায় আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৮ জুন, ২০২১ at ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ

বেশ কিছুদিন ধরেই উপজেলা পর্যায়ে করোনায় আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী। দীর্ঘ সময় ধরে উপজেলার তুলনায় মহানগরের শনাক্তের হার তুলনামূলক বেশি থাকলেও কিছুদিন ধরে এ চিত্র পাল্টে গেছে। বর্তমানে মহানগরের তুলনায় উপজেলা পর্যায়ে আক্রান্তের হার বেশি। চলতি জুন মাসের প্রথম ৭ দিনের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায়ও এমন চিত্র উঠে এসেছে।
গ্রাম পর্যায়ে সংক্রমণের হার বেড়েছে স্বীকার করে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বিও বলছেন, ঈদের সময় মানুষ অনেকটা বেপরোয়াভাবে শহর ছেড়ে গ্রামে গেছেন। এমন পরিস্থিতি দেখে ঈদ পরবর্তী সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করেছিলাম আমরা। ঈদের ২/৩ সপ্তাহের ব্যবধানে এখন সেটাই সত্যিই হচ্ছে। অর্থাৎ শহর থেকে যাওয়া মানুষজনই গ্রামে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছেন।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়- গত ১ জুন পরীক্ষাকৃত নমুনায় মহানগরে করোনা শনাক্তের হার ছিল ১২ শতাংশ। আর উপজেলা পর্যায়ে শনাক্তের এ হার ৩১ শতাংশ। ওই দিন মোট ৮৭৯টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে। শনাক্তের গড় হার ছিল ১৫ শতাংশ। এর মধ্যে মহানগরের ৭৩৫টি নমুনায় ৮৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর উপজেলা পর্যায়ের ১৪৪টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয় ৪৬ জনের।
২ জুন মহানগরে শনাক্তের হার দাঁড়ায় ৮ শতাংশ। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে এ হার ছিল ৫০ শতাংশের বেশি (৫৩ শতাংশ)। ওই দিন মোট ১ হাজার ১৫১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে। শনাক্তের গড় হার ১১.৯০ শতাংশ। এর মধ্যে মহানগরের ১ হাজার ৫৩টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয় ৮৫ জনের। আর ৯৮ নমুনায় ৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয় উপজেলা পর্যায়ে।
৩ জুন মহানগরে শনাক্তের হার যেখানে ১০ শতাংশ, সেখানে উপজেলা পর্যায়ে শনাক্তের হার ২৫ শতাংশ। ওইদিন মহানগরের ৬৯৭টি নমুনায় ৭৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর ১৪৭ নমুনায় ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয় উপজেলা পর্যায়ে। একই ভাবে ৬ জুন মহানগরে শনাক্তের হার ছিল ৬ শতাংশ। আর উপজেলা পর্যায়ে শনাক্তের হার দাঁড়ায় ২৬ শতাংশ। ওইদিন মহানগরের ৬১৫টি নমুনায় ৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর ১৩১ নমুনায় ৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয় উপজেলা পর্যায়ে। সর্বশেষ গতকাল মহানগরে ৯ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়, আর উপজেলা পর্যায়ে শনাক্তের হার ছিল ২৮ শতাংশ। গতকাল ৩৭০টি নমুনায় ৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয় মহানগরে। আর উপজেলা পর্যায়ের ৮৯টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয় ২৫ জনের।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত মে মাসে সবমিলিয়ে ২৭ হাজার ৭৩৫টি নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৩৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয় চট্টগ্রাম মহানগরে। কিন্তু একই সময়ে ৩ হাজার ৪০৩টি নমুনা পরীক্ষায় উপজেলা পর্যায়ে ৯০৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। হিসেবে মহানগরে শনাক্তের হার যেখানে ৮ শতাংশ, সেখানে উপজেলা পর্যায়ে শনাক্তের হার ২৬ শতাংশের বেশি।
কয়েকমাস আগেও উপজেলা পর্যায়ে খুব কম সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা হতো জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, তবে ঈদ পরবর্তী নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শনাক্তের হারও বাড়ছে। অবশ্য এটা ঠিক যে, ঈদের সময় শহর থেকে যাওয়া মানুষজনই গ্রামাঞ্চলে ভাইরাসের সংক্রমন ছড়িয়েছেন। যা ঈদ পরবর্তী প্রভাব হিসেবে এখন দৃশ্যমান হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংসদে বিরোধীদের তোপের মুখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আরও ২ মৃত্যু