বাংলাদেশে সংবিধানের আলোকেই আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে, ভারত এমনটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা জানান। খবর বাংলানিউজের।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা যাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, বাংলাদেশে সংবিধানের আলোকে নির্বাচন হবে। এখানে যেসব দাবি আছে, সেগুলোর প্রয়োজন নেই, এটি তারা বোঝে। তারা মনে করে, সংবিধানের আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট বাংলাদেশ হবে। নির্বাচনে ভারত সহযোগিতা করবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন করবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ সরকার। এখানে ভারতের কিছু করার নেই। ভারত নির্বাচনে কী করবে? তাদের কিছু করার নেই। তারা কোনো মন্তব্য করেনি।
জঙ্গিবাদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জঙ্গিদের একটি ক্রস বর্ডার কানেকশন রয়েছে। এই সম্পর্কে ভারত জানে বলে জানিয়েছেন হাছান মাহমুদ। আগামী নির্বাচনে বিরোধী দলের সহিংসতা সম্পর্কে ভারতীয়দের মনোভাব কী, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এটি রাষ্ট্রের বিষয়, আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। দুই দেশেরই জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার জন্য দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে যোগাযোগ আছে, তথ্য আদান প্রদান হয়।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের ভূমিকা কী থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত পার্শ্ববর্তী দেশ। তাদের সঙ্গে আমাদের কানেকটিভিটি অনেক বেশি। পার্সন টু পার্সন কানেকশন, আপনারা জানেন। বাংলাদেশে কী হচ্ছে, তারা সবকিছু জানে। রাজনৈতিক–অর্থনৈতিক কিছু বিষয়ে তারা জানে, তাদের আগ্রহ আছে। হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির বিদেশপ্রীতি আছে। তাদের ধরনা দেওয়া কমেনি। এমনটি করে যে কোনো লাভ হচ্ছে না, তা তারা অনুধাবন করতে পেরেছে। আমরা ভারত গিয়েছি আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে। আর প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক এ বিষয়ে বলেছেন, তারা বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে এখন দেখছে যে কিছু নেই, পানিতে ডুবে যাবে। বাংলাদেশের মানুষই নির্ধারণ করবে, ভবিষ্যৎ রাজনীতি কার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে।
তিনি বলেন, আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির আমন্ত্রণে ভারত সফরে যাই। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ, অর্থ দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক চড়াই–উতরাই পেরিয়েছে। আর বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অনেক উঁচুতে। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অভাবনীয়ভাবে। অতীতে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ১০ ট্রাক অস্ত্র ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু এখন বাংলাদেশ এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেবে না। শেখ হাসিনার এমন পদক্ষেপ তারা (বিজেপি) সন্তুষ্ট।
৬ আগস্ট থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ভারত সফর করে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলটি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে সফরে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম–সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আরমা দত্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ও কার্যনির্বাহী সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধিদলের পাঁচ সদস্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপ–দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও উপ–প্রচার সম্পাদক আব্দুল আওয়াল শামীম।