হেমন্তের শেষে দুই মাসের অতিথি হয়ে আসে শীত। মাঘের তীব্রতা কাটিয়ে বসন্তের আগমনেই বিদায় নেয় সেই শীত। কখনো হাঁড় কাঁপানো শীতে কখনো মৃদুভাবে কাটে এ দুই মাস। আজ শেষ হতে চলেছে শীতের মৌসুম। কাল থেকে শুরু হবে বসন্তের হাওয়া। গাছপালায় গজাবে নতুন কুড়ি। পরিবেশে ফিরবে নতুন আমেজ। তবু মন চাইবে একটু শীতেই ফিরে যাই। শিশির ভেজা শীতের সকালের কথা মানুষ মনে পড়বে বৈ। বলা হয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন আমাদের বাংলাদেশ। ষড়ঋতুর দেশ এই বাংলাদেশে প্রত্যেক ঋতু তার নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য নিয়ে আবির্ভূত হয়। পৌষ ও মাঘ মাস এ দুই মাস শীতকাল হলেও অগ্রহায়ণ মাস থেকে শীতের সূচনা হতে দেখা যায়। শীতের আগমনে পত্র কুঞ্জে, জলে–স্থলে সর্বত্র একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
শিশির ভেজা ভোরের উদীয়মান রবির কিরণে বাড়ির উঠোনকে আলোকিত করে। তখন রোদে পিঠ ফিরিয়ে বাড়ির আঙিনায় পিঠা পায়েস ও মুড়কি মোয়ার আনন্দে সবাই আস্বাদন করে শীতের রূপ বৈচিত্র্যকে। গাম্ভীর্যময় বৈশিষ্ট্যের জন্য শীতের সকাল বছরের অন্য ঋতুর সকাল থেকে স্বতন্ত্র। কবি সুকান্ত তাই বলেছেন, শীতের সকাল/দরিদ্রের বস্ত্রের আকাল/শীতের সকাল/অসাম্যের কাল/ধনীর সুখ আর আনন্দ/শ্রেণী সংগ্রাম এ নিয়ে চলে দ্বন্দ্ব।
শীতের সময় সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করে বলে বাংলাদেশে সূর্যের রশ্মি তির্যকভাবে পড়ে। তাপমাত্রার পরিমাণ কমতে থাকে। রাত বড় আর দিন ছোট হয়। আদিগন্ত মাঠজুড়ে থাকে হলুদ সরষে ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য। শীতকাল অনেকেরই প্রিয় ঋতু। তাদের কাছে শীতের শেষে মনে হয় যেন শীত ফিরে আসুক আবার।