রাঙ্গুনিয়ায় দুই ভাই খুনের ঘটনায় দুই ভাই গ্রেপ্তার

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় আপন দুই ভাইকে একসাথে ছুরিকাঘাতে খুনের ঘটনায় পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭। গতকাল বুধবার দুপুরে তাদের দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আগামী সোমবার তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. মোর্শেদুল আলম (২২) এবং তার বড় ভাই মো. সাইফুল ইসলাম সাইফু (৪২)। তারা উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম খুরুশিয়া মধ্যম পাড়া গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে। এর আগে ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে তাদের পিতা শফিকুল ইসলাম ও অপর ভাই খোরশেদ আলমকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তারা সবাই খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার নামীয় আসামি।

গত ১৬ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটার দিকে পদুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম খুরুশিয়া গ্রামে গ্রেপ্তারকৃতরা গরুর গলা থেকে রশি খুলে নেয়াকে কেন্দ্র করে জালাল উদ্দিন (২৫) ও তার ছোট ভাই কামাল হোসেনকে (২২) ছুরিকাঘাতে খুন করে। তারা একই গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন প্রতিবেশী মো. ইদ্রিছ এবং তার তিন ছেলে মো. বাদশা, সালাউদ্দিন ও মো. রানা।

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, আসামি সাইফু গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানাধীন পূর্ব নিমতলা ডিয়ারপাড়া একটি বিল্ডিংয়ের ৪র্থ তলায় আত্মগোপন করে আছে- এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে অপর আসামি মো. মোর্শেদুল আলমকে মহানগরের বন্দর থানাধীন বেচাশাহ রোডস্থ পশ্চিম গোসাইল ডাংগা একটি বাড়ি থেকে রাত দেড়টার দিকে গ্রেপ্তার করে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। তারা খুনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওবাইদুল ইসলাম গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে এবং মামলার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পলাতক বাকি দুই আসামিকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০/১৫ দিন আগে নিহত ভিকটিমের পরিবারের গৃহ পালিত গরুর খুঁটিসহ রশি মাঠ থেকে কে বা কারা চুরি করে নিয়ে যায়। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর সকাল ১১টার দিকে ভিকটিম জালাল পূর্বের ন্যায় তাদের গৃহপালিত গরু নিয়ে ক্ষেতে গিয়ে দেখতে পায় যে শফিকুল ইসলাম তাদের চুরি হওয়া রশি দিয়ে তার গৃহপালিত গরু বেঁধে রেখেছে।

তখন ভিকটিম জালাল রশি কোথায় পেয়েছে জানতে চাইলে প্রথমে বাকবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতি হলে শফিকুল ইসলাম সামান্য আহত হয়। এর জেরে একইদিন বিকাল ৫টার দিকে শফিকুলের তিন ছেলে জালালের ওপর হামলা চালায়। তাকে বাঁচাতে ভাই কামালসহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে ছুরিকাঘাতে জালাল ও কামাল গুরুতর আহত হয়। হাসপাতালে নেয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন ইদ্রিছ ও তার তিন ছেলে। এই ঘটনায় নিহতদের পিতা জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানায় শফিকুল ও তার তিন ছেলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহতদের পিতা জহিরুল ইসলাম বলেন, যারা তুচ্ছ ঘটনায় আমার দুই সন্তানকে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে, আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন আকর্ষণ চার উট পাখি
পরবর্তী নিবন্ধগ্রহাণুতে মানববসতি!