যে সয়, সে রয়

জোনাকী দত্ত | মঙ্গলবার , ৩০ মে, ২০২৩ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

একটি সন্তান পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগ পর্যন্ত একজন মাকে যে কষ্ট সহ্য করতে হয় তা শুধু একজন মাই জানে। কিন্তু তার এই কষ্ট, সহিষ্ণুতা, ধৈর্য, অপেক্ষার পর যখন তিনি সন্তানের মুখ দর্শন করেন এক নিমিষেই সব যন্ত্রণা দূরীভূত হয়ে যায়। তার ধৈর্যের সমাপ্তি ঘটে। এই বিশ্ব সংসারে কষ্ট, বেদনা, অবহেলা, অপমান, সহ্য, ধৈর্য ছাড়া মানুষ কোনো ভালো পথে পাড়ি দিতে পারেনি। একটি শিশু দাঁড়াতে গিয়ে বারবার পড়ে যায়। তারপরও সে উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করে। হাঁটতে গিয়ে আছাড় খাওয়ার পরও ধৈর্য ধরে হাঁটার চেষ্টা করে এক সময় সক্ষম হয়। তারপর তার শিক্ষা জীবন, কর্ম জীবন এবং সংসার জীবনে যখন সে প্রবেশ করে তখনও তাকে মানুষের তাচ্ছিল্যের মুখোমুখি হতে হয়। সে ছেলে হোক কিংবা মেয়ে। এই সহিষ্ণুতার পরীক্ষায় যে জয়ী হয় শেষ পর্যন্ত সেই টিকে থাকতে পারে। কথায় বলে ‘যে সয়, সে রয়।’

আমাদের সমাজের পারিপার্শ্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় একজন মানুষ প্রতিষ্ঠিত হতে গেলে তাকে নানা সমালোচনা, হিংসা, অবহেলা, অপমানের সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু সে যদি উত্তেজনা বশে তার প্রতিবাদ না করে বরং সবকিছু নীরবে সহ্য করে তার আত্মবিশ্বাসের জোরে সুদিনের অপেক্ষা করে তাহলে তার সফলতা আসবেই। অমার্জনীয় ব্যবহার, ক্রোধ, অধৈর্য, অহংকার একজন মানুষকে এগিয়ে চলার পথে বাধা সৃষ্টি করে। বারবার ব্যর্থ হয়ে অনেক সময় মানুষ ধৈর্য হারিয়ে হতাশায় ভোগে যা তাকে মৃত্যুর পথে নিয়ে যেতে বাধ্য করে। ধৈর্য ও সহনশীলতার শক্তি মানুষকে অনুপ্রাণিত করে তার নানা সমস্যা মোকাবেলায়। এ সহনশীলতার শক্তিতে জ্ঞানী, গুণী ও মহামানবরা পৃথিবীর বুকে দুঃখ জয়ের অক্ষয় কীর্তি রেখে গেছেন। তাই মানুষের তুচ্ছ তাচ্ছিল্যকে উপেক্ষা করে সহ্যশক্তি, সাহস ও অধ্যবসায়ের সাথে কাজ করে যাওয়াই উত্তম। সবুরে মেওয়া ফলে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅসামপ্রদায়িক কবি কাজী নজরুল ইসলাম
পরবর্তী নিবন্ধকারো চাটুকারিতা না করে আত্মসম্মান বজায় রাখা উচিৎ