যুদ্ধের বাজারে চড়ছে ডলার, চড়তে পারে আরও

| শুক্রবার , ২৯ এপ্রিল, ২০২২ at ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের ডামাডোলে ডলারের দাম চড়ছেই; আসছে সময়ে ডলারের বিপরীতে টাকার আরও দরপতন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ডলারের দামে লাগাম টানতে সরকারের নানা পদক্ষেপের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের উপর রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে এই প্রতিবেদন বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে অবহিত হয়েছি। এটা কূটনৈতিক সমস্যা নয়, মূলত অর্থনৈতিক সমস্যা। অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি দেখছে। খবর বিডিনিউজের।
ডলারের দাম বেশ বেড়ে যাওয়ায় আমদানি নিয়ন্ত্রণসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা সম্প্রতি জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। তবে অর্থনীতি গবেষক সেলিম রায়হান মনে করেন, চলমান অস্থিরতার মধ্যে পরিস্থিতির উপর নিবিড় চোখ রেখে তাৎক্ষণিকভাবে করণীয় ঠিক করা। তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রভাব আমরা দেখতেই পাচ্ছি, বিশ্ব ব্যাংকও এ নিয়ে কথা বলেছে। আমাদের দরকার এই অ্যাসেসমেন্টটা সময় সময় করা। একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর করতে পারলে করণীয় ঠিক করতে পারব।

বেশ কিছু দিন ধরে বাড়তে থাকা ডলারের চাহিদা সাম্প্রতিক সময়ে আরও তীব্র হয়েছে; এতে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে টাকার বিপরীতে দামও গিয়ে ঠেকেছে সর্বোচ্চে। আন্তঃব্যাংক লেনদেনে টাকার বিপরীতে ডলারের দর যেমন বেড়েই চলেছে, খোলাবাজারেও তা থেমে নেই। ব্যাংক কিংবা মুদ্রাবাজার থেকে নগদ ডলার কিনতে এখন গুনতে হচ্ছে ৯২ টাকার মতো। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার আন্তঃব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। গত বছরের এই দিনে যা ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। ধারাবাহিকভাবে ডলারের দাম বেড়ে চলার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। সরাসরি প্রভাব পড়ছে আমদানিতে, বাড়ছে পণ্যের ব্যয়। বিদেশ যেতে যাদের নগদ ডলারের প্রয়োজন তাদেরও গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। আর টাকার অবমূল্যায়নে রপ্তানি আয়ে লাভবান হওয়ার প্রচলিত ধারণার বিপরীতে রপ্তানিকারকরা বলছেন, তারাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে বাণিজ্য ঘাটতি ৫৬১ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৬৮৭ কোটি ডলার। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের উপর চাপ বেড়ে ডলারের বিপরীতে টাকার আরও দরপতন ঘটাতে পারে। যুদ্ধের কারণে বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতিসহ অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ লেনদেনও জটিলতায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজলদস্যু সম্রাট বাইশ্যা এখন পাহারাদার
পরবর্তী নিবন্ধটাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের আহ্বান