রবীন্দ্রসমকালীন কবিদের মধ্যে অন্যতম বিশিষ্ট কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী। কবিতা রচনার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করেছেন বেশ কিছুকাল। একটি উপন্যাস ও স্মৃতিকথাও রয়েছে তাঁর। ১৮৭৮ সালের ২৭ জানুয়ারি নদীয়ার জামশেদপুরে যতীন্দ্রমোহন বাগচীর জন্ম। কলকাতার ডাফ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে বিচারপতির পি.এস হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে নাটোরের মহারাজার পি.এস হিসেবেও কাজ করেছেন। ছিলেন কর কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
তাঁর কবিতা লেখার শুরু কিশোরকাল থেকে। একুশ বছর বয়স থেকে পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত তাঁর রচনা প্রকাশিত হতে থাকে। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘লেখা’। এটি একটি কাব্যগ্রন্থ। অন্যান্য রচনার মধ্যে রয়েছে ‘রেখা’, ‘অপরাজিতা’, ‘নাগকেশর’, ‘কাব্যমালঞ্চ’, ‘পাঞ্চজন্য’, ‘পথের সাথী’,‘বন্ধুর দান’, ‘জাগরণী’, ‘নীহারিকা’ এবং ‘মহাভারতী’। ‘রবীন্দ্রনাথ ও যুগসাহিত্য’ নামে একটি স্মৃতিকথা এবং ‘সাথী’ নামে একটি উপন্যাসও রয়েছে তাঁর। পল্লীপ্রকৃতি, পল্লীর সহজ-সরল মানবজীবন, মানুষের দুঃখ-কষ্ট, নারীর নীরব বেদনাবোধ যতীন্দ্রমোহন বাগচীর রচনার প্রধান বিষয়বস্তু।
কখনো কখনো নাগরিক জীবনের সাথে সরল ও সাধারণ গ্রামীণ জীবনের তুলনাও ফুটে উঠেছে নিপুণভাবে। বিষয়বস্তুর স্পষ্টতা, সহজ কিন্তু প্রাঞ্জল ভাষা আর ছন্দের কারুকার্য তাঁর কবিতাকে দিয়েছে বিশিষ্টতা। ‘মানসী’ ও ‘যমুনা’ পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক এবং ‘পূর্বাচল’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন তিনি। ১৯৪৮-এর ১ ফেব্রুয়ারি কবি প্রয়াত হন।