মেয়াদোত্তীর্ণ চট্টগ্রাম নগর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের গ্রুপিং এবং সংগঠনের প্রতি দায়সারা ভাবের কারণে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় নেতারা। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে সংগঠনের প্রতি আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। দক্ষিণ জেলা যুবলীগের তিন বছর মেয়াদের কমিটি এখন অনেকটা সমন্বয়হীনতায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে দশবছর। এদিকে ৩ মাসের নগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটি পার করেছে ৭ বছর। এতে এখন নগর যুবলীগের আহবায়ক-যুগ্ম আহবায়কগণ এবং দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনেকেই আর যুবলীগ করতে চান না বলে আজাদীকে জানিয়েছেন। তারা অনেকেই স্ব স্ব জেলা ও নগর আওয়ামীলীগের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে কাজ করছেন। ফলে যে যার মতো করে চলছে নগর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের শীর্ষ নেতারা। অনেকটা দায়সারাভাবে চলছে এই দুটি সংগঠন। সাম্প্রতিক সময়ে নগর ও জেলা যুবলীগের শীর্ষ নেতাদের গ্রুপিংয়ের খবর কেন্দ্র পর্যন্ত গড়িয়েছে।
এব্যাপারে আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হোসেন খান নিখিল আজাদীকে জানান, চট্টগ্রাম নগর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের গ্রুপিংয়ের বিষয়টি আমি জানি। এজন্য তাদেরকে শীঘ্রই ডাকবো। যুবলীগ অনেক বেশি সুশৃঙ্খল ও নিয়মতান্ত্রিক। সেইভাবে চলতে হবে। নগর ও দক্ষিণ জেলা যে মেয়াদোত্তীর্ণ সেটাও জানি। আমরা করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেটা দেখছি। নগর ও দক্ষিণ জেলাকে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিগুলো করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। যেহেতু নগর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ, তাই কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা করা হবে কিনা জানতে চাইলে নিখিল জানান, আমরা নিয়মের বাইরে যাবো না। সম্মেলনে যাবো। সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে বলবো। ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
নগর যুবলীগের সম্মেলন ও নতুন কমিটির বিষয়ে নগর যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু আজাদীকে বলেন- আমাকে কেন্দ্র থেকে চেয়ারম্যান পরশ ভাই ( শেখ ফজলে শামস পরশ) এবং সাধারণ সম্পাদক নিখিল ভাই ( যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হোসেন খান নিখিল) আগে বলেছিলেন গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়মতান্ত্রিকভাবে সম্মেলন হবে। ভোটের মাধ্যমে যে আসে তাকেই গ্রহণ করা হবে। ওয়ার্ড কমিটিগুলো করতে বলেছেন। সেইভাবেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। নিজে আর যুবলীগ করবেন না জানিয়ে মহিউদ্দিন বাচ্চু আজাদীকে বলেন- আমি নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। আমি নগর যুবলীগকে ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শক্তিশালী করে তুলেছি। নগর যুবলীগ এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। গ্রুপিংয়ের বিষয়ে তিনি জানান, এটা গ্রুপিং নয়, যে কোনো বড় দলে কাজ করতে গেলে মনোমালিন্য হয়। সেটা গ্রুপিং নয়।
নিজেদের গ্রুপিং ও যুবলীগে থাকা না থাকার বিষয়ে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি আ.ন.ম. টিপু সুলতান চৌধুরী আজাদীকে জানান, আমাদের দুইজনকে(সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক) নিখিল ভাই যেতে বলেছেন। আমি নিখিল ভাই ও চেয়ারম্যান পরশ ভাইকে সম্মেলন করতে বলেছি। সম্মেলন না করে কমিটি দিলেও আমার কোনো আপত্তি নেই। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগেও বলেছি আমি আমাদের সম্মেলনের তারিখ দিয়েছিলাম। কাউন্সিলর তালিকাও কেন্দ্রে জমা দিয়েছিলাম। যেহেতু আমি আর যুবলীগ করবো না, তাই নিয়মতান্ত্রিক ভাবে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলন করে নতুনদের মাঝে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে চাই। সংগঠনে মনোমালিন্য হতে পারে। তবে সংগঠনে যাতে এর প্রভাব না পড়ে সেই ব্যাপারে সতর্ক আছি।
নগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা আজাদীকে বলেন, আমাদের মধ্যে সাংগঠনিক যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে সেটা নিরসন হোক আমরাও চায়। রেজাউল ভাই( মেয়র প্রার্থী) এরমধ্যে আমাদের ডেকেছেন। আমাদের নিয়ে বসেছেন এবং আহ্বায়ককে নিয়েও বসেছেন। আমরা আমাদের কথা বলেছি। আমাদের বসতে কোন আপত্তি নেই।
নগর যুবলীগের অপর যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল হক সুমন বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনেই আমরা কাজ করবো।