শুধু ছাত্ররা নয়, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ যাঁদেরকে ‘স্যার’ সম্বোধন করেন তাঁদের অপর নাম ‘শিক্ষক।’ যাঁদেরকে দেখলে ভক্তি-শ্রদ্ধায় মানুষ গদগদ হয় তাঁরা হলেন ‘শিক্ষক।’ তাঁর একমাত্র কারণ, শিক্ষকরা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখান। তাঁদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে মনুষ্য জাতি নিজেদেরকে সভ্য ও সুশিক্ষিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলেন। তাইতো, এক কথায় শিক্ষকদেরকে ‘মানুষ গড়ার কারিগর’ বলা হয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এমন একজন ‘মানুষ গড়ার কারিগর’ বাসায় এসেছিলেন আমাকে দেখতে। অথচ তাঁর সামনে আমি একজন নগণ্য মানুষ। যাঁর কথা বলছি, তিনি হলেন হাজী মহসীন কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজের স্বনামধন্য সাবেক অধ্যাপক ও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আহমদ হোসেন।
স্যার আমাকে দেখতে আসার কোন প্রয়োজন পড়ে না। তবে তিনি আমাকে নয়, দেখতে এসেছিলেন তাঁর শিক্ষকের সন্তানকে। আজ থেকে ষাট বছর আগে হাটহাজারী পার্বতী হাইস্কুলে আমার বাবা মরহুম মৌলভী হাফিজুর রহমান বিএবিটি’র প্রিয় ছাত্র ছিলেন অধ্যাপক আহমদ হোসেন সাহেব। যখনই ফোনে কথা হয়, আলাপের সিংহ ভাগ জুড়ে থাকে তাঁর পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের স্মৃতি চারণ। দীর্ঘ পাঁচ যুগ পরেও ভুলতে পারেন নি আমার বাবার স্মৃতি। তিনি নাকি আমার মাঝে তাঁর প্রিয় শিক্ষাগুরুর প্রতিচ্ছবি খুঁজে পান।
যাক, শিক্ষকের সন্তান হয়ে জন্মগ্রহণ করেছি বলে বাবার ছাত্র আরেকজন শিক্ষকের পদধূলিতে আমার বাসা ধন্য হল। তাঁর স্নেহাশীর্বাদে নিজেও ধন্য হলাম। শিক্ষক তনয় হিসেবে এটাই আমার পরম প্রাপ্তি। দীর্ঘ দু’ঘণ্টার একান্ত আলাপচারিতার এক পর্যায়ে স্যারের আগমন বার্তা পেয়ে বড় ভাই আলহাজ্ব সরওয়ারউদ্দিন মুহম্মদ খসরু উপস্থিত হলেন। দুই ভাইকে এক সাথে দেখে স্যারও হলেন দারুণ খুশি। সম্মানিত আগন্তুক অতিথিকে দেয়ার মত কোন উপহার আমার ছিল না। উপহারস্বরূপ ছিল, বাবার নির্বাচিত কবিতার একটি বই ও আমার লেখা দুটো বই। অগ্রজতুল্য অধ্যাপক আহমদ হোসেন সাহেব আপনাকে সশ্রদ্ধ স্যালুট।