বিপ্লব উদ্যানসহ নগরে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া যেসব সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলোর চুক্তি বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। তিনি বলেন, বিপ্লব উদ্যানের চুক্তিটা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত না। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সিটি কর্পোরেশনের ১০০ কোটি টাকার জায়গা বছরে মাত্র এক লাখ টাকায় ভাড়া দিয়েছে। সাবেক মেয়র আ.জ.ম নাছিরকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এ ধরনের কাজ কখনো করতে পারেন না। তাই বিপ্লব উদ্যানের চুক্তি বাতিল হবে। বিপ্লব উদ্যান ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া যা কিছু হয়েছে সবগুলোর চুক্তি বাতিল করব। সেটা বিপ্লব উদ্যান হোক বা অন্য কোনো সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। গতকাল দৈনিক আজাদীর সাথে একান্ত আলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সিটি কর্পোরেশনের সাথে স্টাইল লিভিং আর্কিটেক্টস লিমিটেড ও রিফর্ম এর সাথে বিপ্লব উদ্যানের সৌন্দর্যবর্ধনে ২০ বছরের জন্য চুক্তি হয়। গত ২৫ আগস্ট সেখানে পরিদর্শনে যান চসিক প্রশাসক। তখন তিনি সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পে চুক্তির শর্ত লক্সঘনের প্রমাণ পাওয়ায় চুক্তিবহির্ভূত স্থাপনা অপসারণ না করা পর্যন্ত ইজারাদার প্রতিষ্ঠানকে সেখানে নির্মিত দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এরপর গত ২৭ সেপ্টেম্বর চুক্তির শর্ত লক্সঘন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ করা এক সারি বসার স্থান (দোকানের সামনে) ভেঙ্গে দিয়েছে চসিক পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ। গতকাল দোতলায় নির্মাণ করা দোকানও ভেঙ্গে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিকে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল চট্টগ্রামের একটি আদালত প্রশাসকসহ চসিকের পাঁচ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
নোটিশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, এটা সমস্যা না। কোর্টে অভিযোগ করায় জানতে চেয়েছে। যেটা সত্য সেটা আমরা জানাব, নির্দিষ্ট সময়ে জবাব দিব। শোকজের সাথে দোকান ভাঙা স্থগিত রাখার কোনো সম্পর্ক নেই। না ভাঙার জন্য কোনো নির্দেশনাও দেয়নি। তারা অভিযোগ দিয়েছে সে আলোকে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে।
বিপ্লব উদ্যানের চুক্তি বতিল করা হবে জানিয়ে প্রশাসক বলেন, তবে আমি চেয়েছিলাম, ইজারাদার চট্টগ্রামের ছেলে এবং আগের মেয়র চুক্তি করেছেন বলে নিয়মের মধ্যে বিপ্লব উদ্যান পরিচালিত হোক। হাকিম নড়ে হুকুম নড়ে না পদ্ধতিতে বহাল রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন তারা (ইজারাদার) যখন আমাকে জজ কোর্ট দেখাচ্ছে তখন আমরাও আইনগত ব্যবস্থা নিব। শোকজের জবাব দিব, সাথে তারা কতটা মামলা করতে পারে দেখব। তিনি বলেন, যারা দোকানদার তারাই উপরের সবগুলো ভেঙ্গে ফেলেছে। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত হওয়ার পর দোকানদাররা বলেছেন, এত ঝামেলা সেটা আমরা জানতাম না। আমাদের কাছ থেকে ইজারাদার ২৫ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। প্রশাসক বলেন, দোকানদারদের বলেছি যেটা নিয়মবহির্ভূত আছে সেটা ভেঙ্গে দোকান চালু করলে আমাদের আপত্তি নেই। আজ শুক্রবারের মধ্যে চুক্তিবহির্ভূত সব দোকান ভাঙা হলে কাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে দোকান চালু করা যাবে বলে জানান তিনি।
খোরশেদ আলম সুজন বলেন, শুধু বিপ্লব উদ্যান নয়; চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বার্থের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়িয়েছে তারা যত বড় লোকই হোক না কেন তাদের কোন অবস্থাতেই ছাড় দিব না। ৬০ লক্ষ মানুষের সম্পদ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দিব না।