মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বিরোধীদের দমাতে ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার ও হত্যা বাড়িয়েছে এবং নতুন সেনা সংগ্রহ করছে বলে মঙ্গলবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অঙ সান সু চির নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এ পরিবর্তনে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিন্তু সামরিক বাহিনী সহিংসভাবে বিক্ষোভ দমন করে। এরপর জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ রূপান্তরিত হয়ে বিস্তৃত সশস্ত্র বিদ্রোহে পরিণত হয় এবং একাধিক ফ্রন্টে লড়াই শুরু হয়। এ পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগের উদ্যোগ নেয়। খবর বিডিনিউজের।
রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারে তদন্তকারীদের প্রবেশের অনুমতি না দেওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক কয়েকশ নির্যাতিত ও প্রত্যক্ষদর্শীর আংশিকভাবে দূরবর্তী সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেন। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ক্ষমতা দখলের পর থেকে সামরিক বাহিনী ৫৩৫০ জন বেসামরিককে হত্যা করেছে। এদের মধ্যে ২৪১৪ জন এপ্রিল ২০২৩ থেকে জুন ২০২৪ জাতিসংঘের প্রতিবেদন কভার করার সময়টিতে মারা গেছেন। এদের মধ্যে কয়েকশ জন বিমান ও গোলা হামলায় মারা গেছেন। আগের প্রতিবেদনের পর্বগুলো থেকে এই সময়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি ২০২১ থেকে মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত ২৫ মাসে মারা গেছেন ২৯৩৬ জন আর এপ্রিল ২০২৩ থেকে জুন ২০২৪ পর্যন্ত ১৪ মাসে মারা গেছেন ২৪১৪ জন।
রয়টার্স জানিয়েছে, এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য মিয়ানমারের জান্তার এক মুখপাত্রকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। প্রতিবেদনে পুরো দেশজুড়ে আটকের মাত্রাও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রায় ২৭৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সর্বশেষ সময় পর্বে গ্রেপ্তার করা হয়েছে নয় হাজারেরও বেশি মানুষকে। এদের অনেককেই সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগ দেওয়ার জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যাদের ধরে নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে শিশুরাও আছে।