বিনিয়োগকারীদের আপন নীড় হতে পারে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী

| শুক্রবার , ১১ মার্চ, ২০২২ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের সেরা গন্তব্য হিসেবে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে যাতে আপন নীড় ভাবতে পারেন সেজন্য নীতিগত এবং অবকাঠামোগত সহায়তা নিশ্চিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠায় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি। ইউএই চেম্বার্স অব কমার্স এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) উদ্যোগে যৌথ এই ব্যবসায়িক কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। দুই দেশের ব্যবসায়ীদের যৌথ আয়োজনে দুবাই এঙিবিশন সেন্টারে এই অনুষ্ঠানে আবুধাবি সফরকালীন আবাসস্থল থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন শেখ হাসিনা। খবর বিডিনিউজের।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সেদেশের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, মহামারীর মধ্যেও অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখা বিশ্বের গুটিকয়েক দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ এখন ‘উন্নয়নের বিস্ময়’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে- বলেন শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের বিশেষে অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং আমাদের হাই-টেক পার্কগুলো নতুন উদ্যোগের জন্য প্রস্তুত। বিনিয়োগকারীরা যাতে বাংলাদেশকে আপন নীড় ভেবে বিশ্বের সেরা গন্তব্য হিসেবে বেছে নিতে পারেন তার জন্য আমরা নীতিগত এবং অবকাঠামোগত সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন, বাংলাদেশকে আপনার ব্যবসার গন্তব্য বানান। আমি আপনাদের সকলকে আশস্ত করছি, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন স্থান। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের সুবিধাকে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরে তিনি বলে, আমাদের আছে দুর্দান্ত ভূ-কৌশলগত অবস্থান। সকল প্রধান আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পণ্য পরিবহন রুটের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। এছাড়া জনবহুল এবং ক্রমবর্ধমান দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থলে রয়েছি আমরা।
বাংলাদেশের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার এবং এ অঞ্চলের আশপাশের বাজারগুলো এখনও আনকোরা রয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এসব সুবিধার কারণে বিনিয়োগকারীদের আকষর্ণীয় গন্তব্য হয়ে ওঠায় ভবিষ্যতে উৎপাদন খাতে এবং এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কেন্দ্র হয়ে উঠবে বাংলাদেশ।
আমাদের নীতি হচ্ছে- ‘সকলের সাথে মিত্রতা, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এই নীতিই আমাদেরকে মুক্ত-বাজার বাণিজ্য ও একটি স্বাধীন অর্থনীতির সকল প্রতিবন্ধকতা থেকে আমাদের পৃথক করে রেখেছে। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী দেশ। আমরা চামড়া, পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত দ্রব্য, খাদ্য ও সবার উপর আইসিটি ও আইটিইএস (আইটি এনাবলড সার্ভিসেস)-এ ভাল ও দক্ষ।
বাংলাদেশের ৬৫০ হাজারের বেশি ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপার রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, এছাড়াও বাংলাদেশ উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেটের জন্য পূর্ণ স্পেকট্রাম পাচ্ছে। তিনি বলেন, এখানে একটি বিষয় না বললেই নয়, বাংলাদেশের জনশক্তি আমাদের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে- এরা কঠোর পরিশ্রমী, সাশ্রয়ী শ্রমিক এবং এরা দ্রুত কাজ শিখতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, পায়রা সমুদ্র-বন্দর, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রো রেল, এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ে প্রকল্প এবং এ ধরনের মেগা প্রকল্পগুলো বাংলাদেশে অবকাঠামোগত বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে। তিনি আরো বলেন, প্রকল্পগুলো তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাংলাদেশের ভৌগলিক স্থানের সাথে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিবহন ও যোগাযোগ করিডোরের অর্থনৈতিক স্থানগুলোকে সংযোগ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন খাদ্য, আর্থিক ও জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য কয়েকটি স্তরে আমাদের যোগাযোগ বাড়াচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্যোগে ঝুঁকি মোকাবিলায় ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড মহড়া অবদান রাখবে
পরবর্তী নিবন্ধকাস্টমসে দিনভর সার্ভার বিভ্রাট