বাংলাদেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত। পানির সাহায্যে অত্যন্ত কম খরচে এখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মোট পাঁচটি ইউনিট রয়েছে। সবগুলো ইউনিট একযোগে সচল থাকলে এই কেন্দ্র থেকে মোট ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হতে পারে। কিন্তু পাঁচটি ইউনিটের সবগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম থাকলেও বর্তমানে মাত্র একটি ইউনিট সচল রেখে সীমিত পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী কাপ্তাই লেকে এখন প্রায় ৯০ ফুট মিন সি লেভেল (এম এস এল) পানি থাকার কথা। কিন্তু কাপ্তাই লেকে এখন পানি রয়েছে প্রায় ৮০ ফুট মিন সি লেভেল। অর্থাৎ পরিমাপের চেয়ে প্রায় ১০ ফুট পানি লেকে এখন কম রয়েছে। পানি কম থাকায় কর্তৃপক্ষ একটি মাত্র ইউনিট সচল রেখে কোনোমতে বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। কাপ্তাই লেকে পানি কম থাকার কথা স্বীকার করেছেন কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএসম আব্দুজ্জাহের। তিনি আজাদীকে বলেন লেকে এখন পানি রয়েছে প্রায় ৮০ ফুট এমএসএল। কিন্তু রুলকার্ভ অনুযায়ী লেকে আরো ১০ ফুট পানি বেশি থাকার কথা। দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় লেকের পানি কমে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান। পানি কম থাকায় বর্তমানে একটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সচল রাখা হয়েছে। সচল একটি ইউনিট থেকে প্রায় ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সুত্রে জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কখনো ১ নাম্বার আবার কখনো ২ নাম্বার ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য চালানো হচ্ছে। অর্থাৎ বিরতি দিয়ে ১ ও ২ নম্বর ইউনিট চালু রাখা হচ্ছে। ১টি ইউনিট থেকে যে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে তার পুরোটাই জাতীয় গ্রীডে সঞ্চালন করা হচ্ছে। সূত্র জানায় এবার অনেক আগে থেকেই কাপ্তাই লেকের পানি হ্রাস পেতে শুরু করেছে। খুব সহসা ভারী বৃষ্টিপাত না হলে কাপ্তাই লেকের পানি আরো কমে যাবে। সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরো সঙ্কটে পড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্কট নিরসনে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সার্বিক উন্নয়ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ সোমবার (২৫ মার্চ) লেক পরিচালনা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সভা আহ্বান করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, রাঙামাটির সংসদ সদস্য, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম বন্দর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি, কাপ্তাই লেক ও কর্ণফুলী নদী সংলগ্ন বিভিন্ন উপজেলার ইউএনওসহ কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তপক্ষ উপস্থিত থাকবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।