বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শাসনামল মানেই দেশে লুটপাট, অর্থপাচার আর মানুষকে হত্যা করা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, দেশের মানুষ যখন কষ্ট পায় তখন তারা আরও কষ্ট দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে। যারা মানুষের জীবনের কোনো মূল্য দেয় না, যারা জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা করতে পারে, তারা মানুষের কোনো কল্যাণ করতে পারে না। তাই বিএনপি–জামায়াত জোট যখনি ক্ষমতায় এসেছে তখনি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনে গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে জাতির পিতার হাতে গড়া গণমানুষের দল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষের কল্যাণ হয়, দেশের উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এর ফলে দেশের মানুষ সুখে থাকে। এই সরকারের আমলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার ও শোষণ করা ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি বিএনপি, পারবেও না। এর কারণ হচ্ছে, যাদের হাতে দলটির সৃষ্টি তারা কখনও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসে দলটি বানিয়েছিল। উচ্চ আদালতও এই ক্ষমতা গ্রহণকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছে। এ সময় বিগত ১৪ বছরে হাওরাঞ্চলের উন্নয়নের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, হাওর এলাকা এক সময় দেশের অন্যতম পশ্চাৎপদ ও অবহেলিত জনপদ ছিল। টানা তিন মেয়াদে থাকা এই সরকারের আমলেই অল ওয়েদার সড়ক ও সাব–মার্জিবল (ডুবো) সড়ক নির্মাণ, স্কুল–কলেজ সরকারিকরণ, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, ক্যান্টনমেন্ট স্থাপনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের ফলে জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্য ও গতি এসেছে।
গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে–এমনটা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য হাওরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তিনি আঞ্চলিক ভাষায় জনসাধারণের উদ্দেশে বলেন, বাইয়া দে, নৌকা। উপস্থিত মানুষও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্লোগান দেন, ‘বাইয়া দে, নৌকা’ বলে।
জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে দক্ষ, সৎ, জনপ্রিয় সাহসী নেতার নাম হচ্ছে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী জাতীয় নির্বাচনে খেলা হবে। বিএনপি পথ হারিয়ে এখন পদযাত্রা করছে। তাদের পদযাত্রা প্রস্থে বাড়ছে কিন্তু দৈর্ঘ্যে কমছে। শেখ হাসিনার সরকারকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিএনপি। তারা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে এখন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপি যে হাত দিয়ে সন্ত্রাস করবে সে হাত ভেঙে দেওয়ার জন্য বুকে সাহস নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী মিঠামইনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধন করেন। পরে কামালপুর গ্রামে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়িতে যান। সেখানে রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী রাশিদা খানমসহ পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।












